মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নাম ব্যবহার করে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তোলন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার হাজীগঞ্জর সদর ইউনিয়নের সুবিদপুর গ্রামের মর্জিনা আক্তার ও তার ভাই রাজন কৃষি জমি থেকে গত কয়েকদিন ধরে মাটি উত্তোলন করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তারা দুই ভাই-বোন ওই গ্রামের মৃত জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে।
আর অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী একই ইউনিয়নের মৈশাইদ গ্রামের মো. মুনাব্বর মজুমদার। তিনি এলাকার চিহ্নিত ড্রেজার ব্যবসায়ী এবং ওই ইউনিয়নসহ আশপাশের ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ড্রেজারের ব্যবসা করে আসছেন। তার ছেলে মো. ফরহাদ মজুমদারের মাধ্যমে তিনি সুবিদপুর গ্রামে মর্জিনা আক্তার ও রাজনদের কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তোলনের বিষয়টি দেখাশুনা করাচ্ছেন।
গত ১৫ জুলাই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের অপরাধে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে ড্রেজার ব্যবসায়ী মো. মুনাব্বর মজুমদারের ছেলে ফরহাদ মজুমদার ও জমির মালিক মর্জিনা আক্তারকে নগদ ৫০ হাজার করে দুইজনকে মোট ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন। এসময় তিনি ড্রেজারটি জব্দ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমানের জিম্মায় দেন।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভ্রাম্যমাণ আদালতের ২/৩ দিন পর থেকেই ওই স্থানে আবারো ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন শুরু করা হয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। গত শনিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এর সত্যতা পাওয়া যায়। এ বিষয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিরা জানান, তারা নাকি ডিসি স্যারের কাছ থেকে অনুমোদন এনেছে। তাই ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন করছে।
বিষয়টি স্বীকার করেন ড্রেজার ব্যবসায়ী মো. মুনাব্বর মজুমদার। তার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, যাদের জমি তারা ডিসি স্যারের কাছ থেকে অনুমোদন এনেছে। তাই আমি মাটি উত্তোলন করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অনুমোদনের কাগজ ইউএনও’র কাছে জমির মালিক পৌঁছে দিবেন। তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে জমির মালিক ও তাদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করা যায়নি, তাই বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে ড্রেজারের জিম্মাদার ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান জানান, আমার জিম্মায় থাকলেও তারা আমাকে না জানিয়ে ড্রেজারটি আবারো চালু করেছে। তাই আমি লোক মারফতে ড্রেজার বন্ধ রাখার জন্য বলেছি। কিন্তু তারা আমার কথা শুনেনি। ডিসি স্যারের অনুমতি নিয়েই ড্রেজার চালাচ্ছেন বলে তারা আমাকে লোক মারফতে জানায়।
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, বিষয়টি দেখছি।
১৭ আগস্ট, ২০২১।