হাজীগঞ্জে ফসলি জমির উর্বর মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। ইটভাটার মালিকদের প্রলোভনে পড়ে কৃষকরা দেদারসে বিক্রি করে দিচ্ছেন তাদের ফসলি জমির উপরিভাগের টপসয়েল উর্বর মাটি। এতে করে কৃষি জমির উর্বরতা হারাচ্ছে। দ্রুত এই মাটি কাটা বন্ধ না হলে কৃষি উৎপাদন বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে মনে করেন সচেতনমহল।
সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাউরপাড় উত্তর ও বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের দিকচাইল মাঠের কৃষি জমির উর্বর মাটি এক্সভেটরের (ব্যাকু মেশিন) মাধ্যমে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এভাবেই প্রতিদিন প্রায় শতাধিক ট্রাকে করে মাটি নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়। এ সময় মাটি কাটা সংশ্লিষ্টরা কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৩, মাটির ব্যবহার হ্রাসকরণ নিয়ন্ত্রণ আইনে উল্লেখ আছে, ইট প্রস্তুতের জন্য ইটভাটার মালিকরা কৃষি জমি, পাহাড় বা টিলা থেকে মাটি কেটে বা সংগ্রহ করে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না। এ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে অনধিক দুই বছরের কারাদ- বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
অথচ ইটভাটার মালিকরা এ আইনের তোয়াক্কা না করে ফসলি জমি থেকে মাটি সংগ্রহ করে ইটভাটার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে কৃষিবিদরা বলেন, কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নিলে মাটির রাসায়নিক উপাদান থাকে না। এতে যেমন জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, তেমনি ফসল আবাদে বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে বলে তারা জানান।
সচেতনমহল মনে করেন, দ্রুত এই মাটি কাটা বন্ধ না হলে কৃষি উৎপাদন বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তাই প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করে তারা বলেন, যত দ্রুত সম্ভব এই মাটি কাটা বন্ধ করতে হবে এবং আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

১১ এপ্রিল, ২০২২।