হাজীগঞ্জে মজনু হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার

রহস্য উদঘাটনের দ্বারপ্রান্তে পুলিশ!

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে মাইক্রো চালক মজনু হোসেন (২৮) ওরফে মজনু ড্রাইভারকে হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রসহ অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় রিমান্ডে থাকা আসামির তথ্য অনুযায়ী রোববার (৩ জানুয়ারি) বিকালে পৌরসভাধীন ৭নং ওয়ার্ড টোরাগড় আনোয়ার হোসেন মিজি বাড়ির ডোবা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি চুরি, দুইটি মোবাইল ফোন ও একটি টর্চ লাইট উদ্ধার করা হয়।
এর আগে শনিবার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আটক হত্যাকাণ্ডের শিকার মজনুর বড় ভাই মন্টু (৩৫) ও তার স্ত্রী শান্তা আক্তার (২৬), ছোট ভাই প্রবাসী মফিজের স্ত্রী মাহমুদা ও বড় ভাই কবিরের ছেলে সাইফুল (১৮) কে দুইদিনের রিমান্ডে আনে পুলিশ। রিমান্ডে মজনুর ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মাহমুদার দেয়া তথ্যানুযায়ী ভবনের পাশের ডোবা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলো উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ।
জানা গেছে, জেলহাজতে থাকা মজনুর পরিবারের চার সদস্যকে শনিবার দুইদিনের রিমান্ডে আনে পুলিশ এবং রিমান্ডের প্রথম দিনেই আসামি মাহমুদার দেয়া তথ্যানুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলো উদ্ধার করে জব্দ তালিকায় দেখায় পুলিশ। এর আগে এই ঘটনায় মজনুর ছোট ভাই প্রবাসী মফিজের স্ত্রী মাহমুদা বেগম, ভাই মন্টু ও তার স্ত্রী শান্তা বেগম এবং বড় ভাই কবিরের ছেলে সাইফুল আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।
মজনুর পরিবারের অন্য সদস্যরা জানান, এই ঘটনায় তাদের পরিবারের চারজনকে আটক করে পুলিশ। এর মধ্যে আমরা মাহমুদাকে সন্দেহ করেছি। পরে মাহমুদা আমার পরিবারের বাকিদের জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছে। আমরা মাহমুদার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। মজনুর মা রুপবান বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাবাকে যে খুন করেছে, আমিও তার খুন চাই। খুনের বদলা খুন চাই।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আবদুর রশিদ সংবাদকর্মীদের জানান, মজনুর ভাবি মাহমুদার দেয়া তথ্যনুযায়ী ভবনের পাশের জানালা বরাবর ডোবা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলো উদ্ধার করে জব্দ তালিকায় দেখানো হয়েছে। তিনি বলেন, আশা করি খুব শীঘ্রই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ডিসেম্বর সকালে পৌরসভাধীন ৭নং ওয়ার্ড টোরাগড় এলাকার আনোয়ার মিজি বাড়ির একটি দোতলা ভবন থেকে হত্যাকাণ্ডের শিকার মজনুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগেরদিন সোমবার দিবাগত রাতের কোন এক সময়ে ওই বাড়ির আনোয়ার মিজির ভবনে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত মজনু টোরাগড় গ্রামের গাইন বাড়ির মরহুম আমিন মিয়ার সপ্তম ছেলে। তিনি পেশায় মাইক্রো চালক ছিলেন এবং নিজের গাড়ি নিজেই চালাতেন। মা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রীসহ ওই ভবনের দোতালায় বাসা ভাড়া থাকতেন। তার পাশের কক্ষেই তার বড় ভাই মন্টু মিয়া তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকেন।
মজনু হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পর মজনুর ছোট ভাই প্রবাসী মফিজের স্ত্রী মাহমুদাকে আটক করে পুলিশ। এরপর বড় ভাই মন্টু ও তার স্ত্রী শান্তা আক্তার এবং বড় ভাই কবিরের ছেলে সাইফুল আটক করা হয়।
৪ জানুয়ারি, ২০২১।