হাজীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত

আবারো ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে চায় বিএনপি
………মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
দীর্ঘ ৯ বছর পর শনিবার (২৬ নভেম্বর) হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এদিন সকাল ১১টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে এ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য-নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।
এ সময় তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামসহ বাংলাদেশের যত অর্জন, সবকিছু এসেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরে। আর তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ভিক্ষুকের জাতি থেকে সফলতার শিখরে উন্নীত হচ্ছি। অথচ টেক ব্যাক বাংলাদেশের নামে আমাদের আবারো ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে চায় বিএনপি।
তিনি বলেন, আদালত কর্তৃক দন্ডপ্রাপ্ত আসামি যিনি মুচলেকা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। সেই তারেক রহমান বলেন, টেক ব্যাক বাংলাদেশ। এর অর্থ হচ্ছে, বাংলাদেশকে পিছনে নিয়ে যাওয়া। আর, তার কথার সাথে একই সুরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও একই কথা বলছেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সেই বাংলাদেশকে তারা (বিএনপি) পিছনে নিয়ে যেতে চায়।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি পায়ে পাড়া দিয়ে গোলযোগ করতে চায়। তারা সমাবেশের নামে বিভিন্ন জায়গায় উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে। তারা বলছে, আগামি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় ১০ লাখ নেতা-কর্মীর সমাবেশ হবে। আর ১০ ডিসেম্বরের পরে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ চলবে। আপনারা সমাবেশ করেন, সেখানে ১০ লাখ নয় ২০ লাখ লোকের সমাবেশ করেন, তাতে আমাদের সমস্যা নেই, এটা আপনাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।
তিনি বলেন, তাদের (বিএনপি) এমন ভাবখানা যেন, ১০ ডিসেম্বরের পর সরকার থাকবে না। আমরা বলতে চাই, ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মাস। এ মাসে ষড়যন্ত্র বা বিশৃঙ্খলা করতে যদি মাঠে নামেন, সেটা জনগণ ও সরকার মেনে নিবে না। আর রাজনৈতিকভাবে যদি কথা বলেন, তাহলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠন আপনাদের রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করতে প্রস্তুত আছে।
তিনি বিএনপির প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে কোন ষড়যন্ত্রের পথ খুঁজলে তার উচিৎ জবাব দেয়া হবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে যদি দুর্বল ভাবেন, তাহলে ভুল করবেন। অতিতে জ্বালাও পোড়াও করে মানুষ হত্যা করেছেন। সেই অপকর্মের জন্য যে শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে, আগামীতেও এমন অপরাধ করলে তার চেয়ে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। রেহাই পাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন সম্মানিত অতিথি চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম। বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য-নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ত্রাণ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ নাছির উদ্দিন আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।
হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ হেলাল উদ্দিন মিয়াজীর সভাপতিত্বে এসময় আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ অ্যাড. নুরজাহান বেগম মুক্তা, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের মহাপরিচালক প্রকৌ. মোহাম্মদ হোসাইন, হাজীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আ.স.ম মাহবুব-উল আলম লিপনসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ।
এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলার প্রয়াত নেতৃবৃন্দের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী মাইনুদ্দিন। এরপর প্রয়াত নেতৃবৃন্দের প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সম্মেলনের শুরুতেই পবিত্র কোরআন মাজিদ থেকে তেলওয়াত করেন আওয়ামী লীগ নেতা হাফেজ মো. শাহজালাল এবং গীতা থেকে পাঠ করেন দীলিপ কুমার সাহা।
এরপর সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে আগামি তিন বছরের জন্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এসময় কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, হাজীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর এবং সব ইউনিয়ন থেকে আসা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।

২৭ নভেম্বর, ২০২২।