গ্যাস সংকটে ভোগান্তিতে চাঁদপুরবাসী

ইল্শেপাড় রিপোর্ট
চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় আবাসিক লাইন সংযোগে গ্যাসের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। রান্নার কাজে গ্যাস না থাকায় নাগরিক জীবনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কোনো ধরনের নোটিশ কিংবা কোম্পানির পক্ষ থেকে মাইকিং না করায় অনেকে রান্না করতে পারেনি। ফলে হোটেল থেকেই খাবার এনে খেতে হচ্ছে অনেককে।
রাত ২টার পর থেকে শুরু হয় গ্যাসের সমস্যা। ৭টা পর্যন্ত চুলায় গ্যাস থাকে না। এরপর গ্যাস এলেও ধীরে ধীরে কমতে থাকে। সকাল ৯টার পরে আরও সংকট দেখা দেয়। এরপর ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে। সকাল ৯টার পর বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির চাঁদপুর কার্যালয় থেকে খবর নিয়ে জানা যায়, জাতীয়ভাবে গ্যাসের চাপ নেই, তাই সমস্যা হচ্ছে।
শহরের আদালতপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুমাইয়া আক্তার বলেন, সকালে অফিসে যাওয়ার আগে রান্না করা সম্ভব হয় না। গ্যাসের তাপ এত কম যে চুলায় আগুন ধরতেই সময় লেগে যায়। বাধ্য হয়ে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করতে হচ্ছে।
অন্যদিকে গুয়াখোলা রোড এলাকার গৃহিণী খুকি বেগম জানান, আমাদের এলাকায় গ্যাসের চাপ এতটাই কম যে চা বানাতেও আধাঘণ্টা সময় লেগে যায়। এই অবস্থায় জীবনযাত্রা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে।
পালপাড়ার গৃহিণী সোমা বলেন, গ্যাসের সমস্যার কারণে বিকল্প উপায়ে রান্নার জন্য বিদ্যুতের চুলা কিনে নিয়েছি। ভাতটা রাইস কুকারে রান্না করে নেই। মাঝে মাঝে বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খেতে হয়।
নাজিরপাড়ার সুজন আহমেদ বলেন, সকালে অফিসে এসেছি নাস্তা করতে পারিনি। কারণ বাসায় গ্যাস সরবরাহ নেই। কখন গ্যাস আসবে তাও জানি না। তাই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অনেককে। অপেক্ষা করে উপায় না পেয়ে এখন রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার নিয়ে যাচ্ছি।
শহরের চেয়ারম্যান ঘাটের উকিল ভিলার বাসিন্দা ইসরাত জাহান ইভা বলেন, সকালে হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে জানলাম গ্যাস থাকবে না। পরে চুলা জ্বালিয়ে দেখি গ্যাসের সরবরাহ কম। যে রান্না দুই ঘণ্টায় শেষ হতো সেই রান্না শেষ হতে বিকেল গড়িয়ে গেল। চরম দুরবস্থায় আছি।
চাঁদপুর গ্যাস অফিস সূত্রে জানা যায়, গ্যাসের সঞ্চালন লাইনের চাপ কম এবং চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। এছাড়া জাতীয়ভাবেই গ্যাসের চাপ কম, এখানে আমাদের কিছু করার নেই।
গ্যাস অফিসের একজন কর্মকর্তা জানান, আমরা চেষ্টা করছি সংকট নিরসনে। অবৈধ সংযোগ চিহ্নিত করে বিচ্ছিন্ন করার কাজ চলছে। তবে সঞ্চালন লাইনের সক্ষমতা বাড়ানো ছাড়া স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করছেন, এই সংকট দ্রুত সমাধানের জন্য সঠিক উদ্যোগ নেওয়া হোক। গ্যাসের বিকল্প উৎসের ওপর নির্ভরতা বাড়লে বাসিন্দাদের আর্থিক চাপ আরও বেড়ে যাবে বলে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, ভুক্তভোগীরা এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে কর্তৃপক্ষের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

০৬ জানুয়ারি, ২০২৫।