১৭ বছর উন্নয়নবঞ্চিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিংহভাগ মানুষ
নুরুন্নবী নোমান
গত ১৭ বছরে ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিংহভাগ মানুষ উন্নয়নবঞ্চিত। তার জ¦লন্ত প্রমাণ- ফিরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষের জন্য আশির দশকে ডাকাতিয়া নদীর উপর নির্মিত ব্রিজটি। যা’ এখন মরণ ফাঁদ। ব্রিজের পিলার ও ভীমে বড়-বড় ফাঁটল ধরেছে অনেক আগেই। খসে খসে পড়ছে ব্রিজের বিশেষ অংশ।
ফ্যাসিবাদী সরকারের ভোট চোর জনপ্রতিনিধিদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দীর্ঘদিনেও তাদের চোখে পড়েনি ব্রিজটি। ফলে এমন পরিস্থিতি- যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে পুরো সেতুটি। এমনটিই শঙ্কা স্থানীয় জনগণের। কয়েক দশক আগে নির্মিত সেতুটি দিয়ে বর্তমানে ভারী পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ার কারণে মারাত্মক দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের ডাকাতিয়া নদীর উপর নির্মিত কাটাখালী ব্রিজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজের বিভিন্ন জায়গায় ফাঁটল ও পলেস্তারা খসে পড়েছে। সংস্কারের অভাবে ব্রিজের বিভিন্ন জায়গায় ফাটলের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। ব্রিজের দু’পাশের রেলিং ভেঙ্গে পড়েছে এবং নিচের ফাটাটনের অনেক জায়গায় ফাঁটল ও গর্ত এবং আস্তরা খসে লোহার রড বেরিয়ে এসেছে। এমন অবস্থায় ভারী যানবাহন ভয়ঙ্কর ঝুঁকির কারণে চলাচল বন্ধ। নদীর উভয় পাড়ের হাজার হাজার মানুষের চলাচলে মারাত্মক বিঘ্নতা সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকার মানুষ যান চলাচলে বিঘ্ন হওয়ায় ২০ কিলোমিটার দূরের অন্য সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া ও জ্বালানি খরচ। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই এলাকার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ ব্রিজটি সেতুর বন্ধন হিসেবে ব্যবহার করছে।
অটোচালক মহসিন মিয়া বলেন, জীবিকার তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ ব্যবহার করছি। ছোট-ছোট গাড়ি উঠলেও ব্রিজটি কাঁপতে থাকে। আমরা চাই- দ্রুত ব্রিজটি নতুন করে তৈরি করা হোক।
স্থানীয় ইসহাক বেপারী (৬৫), আ. লতিফ (৫২) ও আলমগীর (২৯) সহ কয়েকজন জানান, ৩০/৩৫ বছরের পুরাতন এ ব্রিজটি দীর্ঘদিন যাবৎ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। আমাদের এলাকার মানুষজন ভোট চোর ও স্বৈরচার সরকারকে পছন্দ না করার কারণে গত ১৮ বছরে এ এলাকায় ব্রিজ বা রাস্তা-ঘাটের কোন উন্নয়ন হয়নি। এই ব্রিজটিও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ফলে, আমরা দীর্ঘদিন যাবত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজটি দিয়ে নদী পাড় হচ্ছি। প্রতিনিয়ত ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। আমরা দাবি করছি- বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই ব্রিজটি নতুনভাবে নির্মাণ করা হোক।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবরার আহাম্মদ জানান, কাটাখালী ব্রিজটির দুর্দশার কথা আমাদের জানা আছে। ইতোমধ্যে ব্রিজের নকশা অনুমোদন হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান আছে। জনস্বার্থে খুব দ্রুত সময়ে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে নতুন নকশার ওপর ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে বলে আশা করছি।
০৩ মার্চ, ২০২৫।