সজীব খান
চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট বাজারে জেলা পরিষদের সম্পত্তি আবারো বেদখল হয়ে গেলো। বাজারের পূর্বের গলি পুরোটাই দোকান নির্মাণ করার কাজ শেষ হয়েছে। বাবুরহাট বাইতুল ফালাহ জামে মজিদ (বড় মসজিদ) পাশেও দখল করা শেষ হয়েছে। শুধু ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের ব্রিজের উপর একটি দোকান ও কবির মিজি মার্কেটের পাশে ৩/৪টি দোকান নির্মাণ করা অসমাপ্ত রয়েছে। ২/১ দিনের ভেতরে সে কাজও শেষ হয়ে যাবে। গতকাল সরজমিনে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গিয়েছে।
এ নিয়ে একাধিকবার দৈনিক ইল্শেপাড়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও টনক নড়েনি জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের। জেলা পরিষদের একেবারে নাকের ডগায় শতাধিক দোকান নির্মাণ করা হলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছিলেন রহস্যজনক কারণে চুপচাপ। বিষয়টি কেমন যেনো প্রশ্নবিদ্ধ মনে হচ্ছে। প্রায় ১ মাস যাবত এই নির্মাণ কাজ চলছিলো। কিন্তু দখলদারদের কেউ বাঁধাও দেয়নি। সংবাদকর্মীরা জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা ‘দেখছেন’ বা ‘ব্যবস্থা নিচ্ছেন’ বলে জানিয়েছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগের চেয়ে বেশি পরিধি নিয়ে আগের মালিকরাই এই দোকান ঘরগুলো নির্মাণ করেছেন। রাস্তার পাশে বেড়া দিয়ে দোকান নির্মাণ করার কাজ শেষ হয়েছে। এ দোকানঘর নির্মাণের অন্তরালে জেলা পরিষদের কোন সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। এভাবে দিনের পর দিন জেলা পরিষদের সম্পত্তিগুলো বেদখল হচ্ছে।
জেলা পরিষদের সন্নিকটে তাদের কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জমি দখল করা হচ্ছে নির্বিঘ্নে। বাবুরহাট বাজারে জেলা পরিষদের প্রায় ৭২ শতাংশ সম্পত্তি রয়েছে বলে জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে। ২০২৪ সালে হাইকোর্ট থেকে জেলা পরিষদ রায় নিয়ে এসে তাদের দীর্ঘদিনের কাক্সিক্ষত প্রত্যাশিত বহুতল ভবন করার লক্ষ্যে শতাধিক ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করেন। এরপর ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর বর্তমান সরকার জেলা পরিষদের কার্যক্রম বিলুপ্ত করেন। এরপর থেমে যায় বহুতল ভবনের কার্যক্রম।
হাইকোর্টের রায় নিয়ে এসে বাবুরহাটের জেলা পরিষদের সম্পত্তি, গত আগস্টের কয়েকদিন আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে জেলা পরিষদের সম্পত্তি থেকে অবৈধ দোকানপাটগুলো উচ্ছেদ করা হয়। এরপর কয়েক মাস যেতে না যেতেই আবার মরিয়া হয়ে উঠে সেই চক্রটি, এখন আবার দোকান নির্মাণের হিড়িক পড়েছে আগের সেই সম্পত্তিতে।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এখন যারা দোকান নির্মাণ করছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। কোন প্রকার ইজারা ও অনুমতি ছাড়াই দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, একবার জেলা পরিষদ হাইকোর্টের আশ্রয় নিয়ে তাদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করতে হয়েছে। আবার দখল হওয়ায় জেলা পরিষদকে কি সেই একই পথে আবার হাঁটবে।
কয়েকজন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, বাড়িতে পিলার নির্মাণ করা হয়েছে। একটু মজবুতভাবে করা হবে। কিভাবে দোকান তুলছেন- জানতে চাইলে তারা বলেন, সবাই মিলে একত্রে দোকান নির্মাণ করছি, আগে দখলে ছিলাম সেই সূত্রেই।
১১ মার্চ, ২০২৫।