ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা স্থানীয় দালালদের
স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর পৌর এলাকার বাবুরহাট বাজারের দক্ষিণ পাশে কালাম শেখের ভাড়াটিয়ার বাসায় ঝুমুর আক্তার (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৯ অক্টোবর সকাল ১০টায়। ঝুমুর নিহতের ঘটনায় তার মা শাহিনা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের ইসলামপুর গাছতলা গ্রামের আনোয়ার হোসেন গাজী আবুল কালাম শেখের বাসায় ভাড়া থাকেন। আনোয়ার হোসেন গাজীর মেয়ে নিহত ঝুমুর ঢাকায় তার মামার বাসায় থেকে পড়ালেখা করতো। সে ছিলো বাড্ডা সিরাজ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী। করোনাকালীন প্রথমদিকে ঝুমুর বাবুরহাটে তার বাবা-মায়ের ভাড়া বাসায় চলে আসে। এসময় মন্টু শেখের ছেলে শান্ত শেখের সাথে তার পরিচয় ঘটলে ঝুমুরের পরিবার জানতে পেরে ঝুমুরকে সাবধান করে দেয়। ঝুমুরের মা শাহীনা বেগম তার ভাইয়ের বাড়িতে ঢাকায় যায়। গত ২৮ অক্টোবর ঝুমুরের বাবা আনোয়ার বাড়ির বাইরে গেলে রাত ৯টার পর শান্ত শেখ ঝুমুরদের ঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে বাড়ির মালিক আবুল কালাম শেখ বাইরে থেকে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। পরে বিষয়টি বাড়ির মালিক কালাম শেখ মোবাইলে ঝুমুরের মা শাহীনা বেগমকে জানালে সে পুলিশকে জানাতে না করেন এবং ঢাকা থেকে এসে বিষয়টি কি করা যায় দেখবেন। আপরদিকে ঘরের ভিতর বন্দী শান্ত শেখকে তার মা ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পরদিন ২৯ অক্টোবর সকালে ঝুমুর তার ছোট বোন সামিয়া (৮) কে ঘরের বাইরে যাওয়ার জন্য বলে এবং সে একা টিভি দেখবে বলে জানায়। সামিয়া পরে এসে দেখে ঘরের দরজা বন্ধ। দরজা খুলতে না পেরে সে কান্না করে। পরে পাশের লোকজন ও বাড়ির মালিক কালাম শেখ দরজা বন্ধ দেখতে পান ও ভেতরে দেখতে পায় ঝুমুর ফাঁসিতে ঝুলে আছে। পুলিশ এসে লাশ ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে ফেলে এবং সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে পোস্টমর্টেমের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, মেয়েটির মৃত্যুটি রহস্যজনক বলে মনে হয়। মেয়েটি কোনো কিছু ছাড়া আত্মহত্যা করার বিষয় রহস্যজনক। প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিলে এমনকি ঐ বাড়ির ও আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি ঝুমুরের প্রেমিককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে।
আরো জানা যায়, নিহতের ঘটনায় স্থানীয় সালিসের নামে দালাল চক্র নিহত ঝুমুর ও শান্ত শেখের পরিবারের লোকদের নিয়ে রফাদফার চেষ্টা করে। ঐ দালাল চক্রটি ঝুমুরের মৃত্যুর মূল্য হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন শান্ত শেখের পরিবারের কাছে। শান্তের পরিবার তা দিতে অনিহা প্রকাশ করে এবং নিহত ঝুমুরের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে বলে জানা যায়।
০৩ নভেম্বর, ২০২০।