শাহরাস্তিতে চোরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ পৌরবাসী

স্টাফ রিপোর্টার
শাহরাস্তি পৌর এলাকায় ছিচ্কে চোরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পৌরবাসী। প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা। সারারাত মাদকের আড্ডা সেরে গভীর রাতে এলাকার এক শ্রেণির উঠতি বয়সী নেশাখোর চোরের দল মোটর সাইকেল, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ মূল্যবান মালামাল লুটে নেয়। এসব চোরের দল বিশেষ কায়দায় ঘরের জানালা ও গেট খুলে প্রতিনিয়তই মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নিচ্ছে। দুর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হওয়ার পর এসব চোরের দল বুক ফুলিয়ে সড়কে চলাফেরা করে আসছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার চিহ্নিত চোর নিজমেহার মাজার রোড আবুল বাসারের ছেলে মো. রকি (২৪), নিজমেহার জামু বাড়ির হাবিবুর রহমানের হেন্জা (২০), নিজমেহার নুর আহমেদ বাড়ির মাহফুজের ছেলে এমরান হোসেন ওরফে রেন্সু (২৮), নিজমেহার রজ্জা চোরা বাড়ির রজ্জা চোরার ছেলে মুনসুর (৩০) ও নিজমেহার চকিদার বাড়ির মনুর ছেলে ইমান (২২)। স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কঠিন নজরদারি থাকলেও রহস্যজনক কারণে এসব ছিচ্কে চোরের দল থাকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। তারা দিব্বি দিনের বেলায়ও লোকজনের সামনে বুক ফুলিয়ে হাটা-চলা করে বেড়ায়।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, কয়েক মাস আগে শাহরাস্তি পৌর ৭নং ওয়ার্ডে গভীর রাতে শাহরাস্তি হাসপাতাল সংলগ্ন ব্যাংকার সেলিম ভূঁইয়ার বাড়ির গেট ভেঙে তার মোটরসাইকেল নিয়ে যায়। এছাড়া ৭নং ওয়ার্ডের মাজার রোডে দিনদুপুরে বাসায় ঢুকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান মালামাল লুটে নেয়। একই ওয়ার্ডের মাজার রোডের বাবুল আখন্দের বাড়ির গেট ভেঙ্গে ভাড়াটিয়া শাহরাস্তি থানার এএসআই সাঈদের মোটরসাইকেল নিয়ে যায়। একই ভবনের ভাড়াটিয়া ওষুধ কোম্পানীতে চাকরিরত এক ব্যক্তির বাসার জানালা খুলে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন লুটে নেয়। একই সড়কের মফিজুল ইসলামের ভাড়াটিয়া ওষুধ কোম্পানীতে চাকরিরত আরেক ব্যক্তির জানালা খুলে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান মালামাল লুটে নেয়। পৌর ৬নং ওয়ার্ডের শ্রীপুর মিয়াবাড়ির সাংবাদিক আমরুজ্জামান সবুজের বাড়ির গেট ভেঙে নতুন ডিসকভার মোটরসাইকেল নিয়ে যায়। পৌর ৭নং ওয়ার্ডের মেহের কালীবাড়িতে দিনদুপুরে বিকাশ ও লোড ব্যবসায়ী আদনান নোমানের ক্যাশের লকার ভেঙে নগদ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এছাড়া গভীর রাতে নিজমেহার আখন্দ বাড়িতে ঢুকে সাংবাদিক নোমান হোসেন আখন্দের বাসার জানালা খুলে ২টি মোবাইল সেট, নগদ টাকা, মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায়। অন্য একদিন গভীর রাতে সাংবাদিক নোমানের বাসার জানালা খুলে দামী ক্যামেরাও নিয়ে যায়। একই বাড়ির শাহাজান আখন্দের বাসার জানালা খুলে নগদ টাকা নিয়ে যায়। একইদিন গভীর রাতে পার্শ^বর্তী জামুর বাড়ির আমির হোসেনের ঘরের জানালা খুলে দামী মোবাইল সেট নিয়ে যায় চোরের দল।
স্থানীয়রা জানান, একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটতে থাকলেও থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রকৃত চোরের দল ও অপরাধীরা শাস্তি না পাওয়ায় চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে। তারা এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা বিট ও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের টহল ব্যবস্থা জোরদার করার তাগিদ দিয়েছেন।
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০।