শাহরাস্তিতে মাদ্রাসা শিক্ষকের ২ বছরের কারাদণ্ড

পরীক্ষার্থীদের নকল সরবরাহের দায়ে

শাহরাস্তি ব্যুরো
শাহরাস্তি পৌর এলাকায় অবস্থিত চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে নকল সরবরাহের দায়ে এক মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রোববার (৩ মার্চ) মাদ্রাসার দাখিল ইংরেজি প্রথমপত্রের পরীক্ষা চলাকালে বেলা সাড়ে ১১টার সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকারি গাড়ি দূরে রেখে হেটে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এসময় কেন্দ্রের ভিতরে অবস্থানরত অফিস সহকারী, আয়া এবং কিছু শিক্ষক ছোটাছুটি শুরু করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেন্দ্রে অনিয়মের বিষয়টি আন্দাজ করতে পেরে শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করেন। পরে শ্রেণিকক্ষের বাইরে এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের বাউন্ডারি সীমানার মধ্যে অসংখ্য হাতে লিখে সমাধান করা প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতি টের পেয়ে শিক্ষকদের ইঙ্গিতে পরীক্ষার্থীরা নকল জানালা দিয়ে শ্রেণিকক্ষের বাইরে ফেলে দিয়েছিল। হাতে লিখে সমাধান করা ফটোকপি করা নকল দেখে কেন্দ্রে উপস্থিত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাজাপুরা আল আমিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ছায়েদুল ইসলাম (৫৩) পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রিন্টারে ২৫-৩০ কপি হাতে লিখা নকলের প্রিন্ট বের করেছেন। ঐ শিক্ষককে পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তিনি একপর্যায়ে জানান, বাসায় মোবাইল ফোন রেখে এসেছেন। তার নম্বরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কল দিলে পাশের ব্যাগের মধ্যে মোবাইল ফোনটি বেজে ওঠে। মোবাইল ফোনে প্যাটার্ন লক ছিল, তাকে প্যাটার্ন লকটি খুলতে বললে তিনি তাৎক্ষণাৎ মোবাইল থেকে কিছু একটা ডিলিট করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তার মোবাইল ফোন তল্লাশি করে হোয়াটসঅ্যাপের মধ্যে শ্রেণিকক্ষের বাইরে উদ্ধারকৃত হাতে লেখা নকলের হুবহু ছবি পাওয়া যায়।
তিনি জানান, তার এক ছাত্র এগুলো সমাধান করে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছে। পরে তিনি কেন্দ্রের প্রিন্টারে প্রিন্ট করে রুমে রুমে নকল সরবরাহ করেছেন।
তিনি দোষ স্বীকার করায় পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন, ১৯৮০ এর ৯(ক) ধারা মোতাবেক রাজাপুরা আল আমিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ছায়েদুল ইসলাম (৫৩)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার ভদ্রগাছা গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে।
ছায়েদুল ইসলামকে ২ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায় আরো ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়াসির আরাফাত।

০৪ মার্চ, ২০২৪।