হাজীগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা

জনজীবনে চরম ভোগান্তি

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরে সারাদেশের মতো চাঁদপুরসহ হাজীগঞ্জেও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে সোমবার থেকে বুধবার (২১ আগস্ট) পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতে হাজীগঞ্জ বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে জনজীবনে ভোগান্তিসহ চরম বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা।
গত তিন দিনে দেখা গেছে, ভারী বৃষ্টিপাতে হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজারস্থ চৌরাস্তা থেকে স্টেশন রোডের সম্মুখ পর্যন্ত, পৌরসভারধীন ৮নং ওয়ার্ড টোরাগড় স্বর্ণকলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট হাই স্কুল এন্ড কলেজ পর্যন্ত কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কসহ উপজেলা ও পৌরসভার বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, বাসা-বাড়ি ও গ্রামাঞ্চালের পথ ও রাস্তাঘাটে পানি জমে আছে।
এর মধ্যে দিনের বেশিরভাগ সময় ভারী বৃষ্টির কারণে সময়মতো পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এতে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। একদিকে বর্ষার পানি, অপরদিকে ভারী বৃষ্টিপাত আর জলাবদ্ধতায় জনজীবনে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি। এই তিন দিন ব্যস্ত হাজীগঞ্জ বাজার ছিলো প্রায় ফাঁকা, সড়কে ছিলো না গাড়ির চাপ। বৃষ্টি উপেক্ষা করে যারা প্রয়োজনে বাজারে এসেছেন, তাদেরও চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
বৃষ্টির কারণে সড়কে সাধারণ মানুষের চলাচল কম এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের না হওয়া যানবাহনেরও সংকটের ফলে হাজীগঞ্জ বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ব্যবসায়ীরা দিনভর কাটিয়েছেন অলস সময়। সন্ধ্যার পরেই অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা দোকান-পাট বন্ধ করে চলে গেছেন। এতে আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা, তেমনি খেঁটে খাওয়া লোকজন পড়েছেন চরম বিপাকে।
হারুন অর রশিদ নামের একজন শিক্ষক বলেন, সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হওয়ায় এখন সড়কসহ রাস্তাঘাটে ও বিভিন্ন বাড়ির পথঘাটে পানি জমে গেছে। লোকজন ঘরের বাইরে যেতে পারছে না। দেখে গেছে, গত তিন দিন প্রতিনিয়ত সকালে টানা ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই কারণে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী স্কুলে আসতে পারেনি। বৃষ্টি উপেক্ষা করে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীসহ আমরা যারা স্কুলে এসেছি, তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
মো. খোরশেদ আলম মিয়াজী নামের একজন ব্যবসায়ী জানান, বৃষ্টি উপেক্ষা করে দোকান খুলেছি। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে মানুষ আসতে না পারায় গত ৩/৪ দিন ধরে অলস সময় পার করছি।
এদিকে অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও খাল-বিলসহ পুকুর ভরাট জলাবদ্ধতার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন সচেতনমহল। তারা বলেন, প্রকল্প আর উন্নয়নের নামে এবং সচেতনতার অভাবে প্রয়োজনে কিংবা লোভের বশবর্তী হয়ে আমরা ব্যাপক হারে খাল-বিল দখল এবং নিজ পুকুর ভরাট করে রাস্থাঘাট ও স্থাপনা নির্মান করেছি, এখনও করছি। তাই, সময় থাকতে খালগুলো উদ্ধার করে জলাবদ্ধতা নিরসনের স্থায়ী সমাধান করা উচিত।

২২ আগস্ট, ২০২৪।