হাজীগঞ্জে ২২৫০ পিস ইয়াবাসহ আটক ৪ মাদক কারবারি

পেটের ভিতরের ইয়াবা পায়ুপথে বের করলো পুলিশ

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
বিক্রির উদ্দেশ্যে অভিনব উপায়ে টেকনাফ থেকে ইয়াবা আনা হচ্ছে হাজীগঞ্জে- এমন খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ সার্কেল) মো. সোহেল মাহমুদের দিক-নির্দেশনায় ও হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দের নেতৃত্বে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে থানার এসআই মোহাম্মদ মিছবাহুল আলম চৌধুরী। অবশেষে সফল অভিযান।
অভিযানে ১৭৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও মাদক বিক্রির নগদ ২৫ হাজার টাকাসহ টেকনাফের বাসিন্দা লাইয়াং মং ওরফে জিতু চাকমা (২২) ও হাজীগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দা মো. সোহেল হোসেন (২৭) নামের দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। গত রোববার দিবাগত রাতে পৌরসভাধীন ৭নং ওয়ার্ড টোরাগড় এলাকার উত্তর পাড়া হোসেন উদ্দিন হাজী বাড়ি (পাথরকিল্লা বাড়ি) থেকে তাদের ইয়াবাসহ হাতে-নাতে গ্রেফতার করা।
এর মধ্যে জিতু চাকমার কাছ থেকে ১০০০ পিস ও মো. সোহেল হোসেনের কাছ থেকে ৭৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। আটক মাদক কারাবারি লাইয়াং মং ওরফে জিতু চাকমা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার লম্বাঘোনা গ্রামের ওটিয়া আং চাকমার ছেলে এবং মো. সোহেল হোসেন হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৭নং ওয়ার্ড টোরাগড় এলাকার উত্তর পাড়া হোসেন উদ্দিন হাজী বাড়ির (পাথরকিল্লা বাড়ি) মহরম আলীর ছেলে।
এদিকে একই দিন বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাজীগঞ্জ থানার এসআই মোহাম্মদ মিছবাহুল আলম চৌধুরীর অপর এক অভিযানে ৫০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই জন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। এরমধ্যে হাজীগঞ্জের মাদক কারবারি মো. কামরুল ইসলাম কামরুল ইসলামের (৩২) কাছ থেকে ২০০ পিস ও কুমিল্লা জেলার শামীম ভূঁইয়ার (৩৫) কাছ থেকে ৩০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়।
এদিন বিকালে পৌরসভাধীন ৪নং ওয়ার্ড মকিমাবাদ এলাকার আতুরিয়া মাদ্রাসার উত্তর পূর্বপার্শ্বে কাজী বাড়ি সংলগ্ন মাদক কারবারি কামরুল ইসলামের বসতঘরের সামনে থেকে তাদের ইয়াবাসহ হাতে-নাতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার কৃত মাদক কারবারি কামরুল ইসলাম ওই বাড়ির মৃত আবুল হোসেনের ছেলে ও শামীম ভূঁইয়া কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার বাঙ্গুরী গ্রামের ফজলু ডাক্তার বাড়ির মৃত শফিকুল ইসলামের ছেলে।
এসময় তাদের কাছ থেকে ইয়াবা পাচার কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত চারজন মাদক কারবারির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৃথক মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে মোট ২২৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ৪ জন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে টেকনাফের মাদক কারবারি লাইয়াং মং ওরফে জিতু চাকমার পেটের ভিতর ইয়াবা রয়েছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার পর তার পায়ুপথ দিয়ে ইয়াবা বের করা হয়।
আরো জানা গেছে, পৃথক অভিযানে জব্দকৃত ইয়াবা ট্যাবলেটের মূল্য আনুমানিক ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এ সময় আসামিদের কাছ থেকে মাদক বিক্রির নগদ ২৫ হাজার টাকা ও মাদক পাচারকাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। এরপর এদিন রাতেই আটক আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, সোমবার দুপুরে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠায়। এ সময় তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের জিরো টলারেন্স। তাই সর্বস্তরের জনসাধারণকে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহবান জানান তিনি এবং তথ্যদাতার নাম-ঠিকানা গোপন থাকার নিশ্চয়তা প্রদান করেন।

০৫ জুলাই, ২০২২।