ইল্শেপাড় রিপোর্ট
কাল বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) চাঁদপুরের বৃহত্তর পেশাজীবী সংগঠন জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চাঁদপুরের বারের ধারবাহিক ঐতিহ্য ধরে রেখে এ বছরও দুই প্যানেল থেকে মোট ৩০ জন আইনজীবী একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ছেন নির্বাচনে। নেই কোন স্বতন্ত্র প্রার্থী। ফলে আগের মতো এ বছরও সমমনা আইনজীবী ঐক্য প্যানেল ও সম্মিলিত আইনজীবী সম্মনয় পরিষদের সাথে হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাশ মিলছে।
তবে এবারের নির্বাচনের ফলাফলে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে জুনিয়র আইনজীবীরা। গত দুই-তিনটি শেসনে সেসব নতুন আইনজীবী সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন মূলত তারাই ট্রাম্পকার্ড হিসেবে পূর্ব নির্ধারিত ভোটের ফলাফলকে পাল্টে দিতে পারে বলে আইনজীবীদের সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে এ বছর বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থী উভয় শিবিরেই আলোচিত প্রার্থী কম বলে ভোটাররা দাবি করছে। ভোটাররা বলছে, মধ্যপন্থী প্রার্থীদের এবার উভয় শিবির থেকে ভোটযুদ্ধে নামানো হয়েছে। তবে প্রার্থীরা বলছে, ধারাবাহিক রেওয়াজ হিসেবেই দলীয় ফোরামে আলোচনা করে প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়। এতে যারা প্রার্থী হন প্রত্যেকেই যোগ্য প্রার্থী। কাউকেই ছোট করে দেখার কিছুই নাই। কারণ, বারের প্রত্যেক সদস্যই তাদের ভোটধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচিত করে থাকেন।
অপরদিকে পেশাজীবী সংগঠন হিসেবে আইনজীবী পাড়ায় শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণাসহ উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সাধারণ আইনজীবীরা বলছে, ভাগাভাগি জয় নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে উভয় প্যানেলকে। তবে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা আশানুরুপ ফলাফল অর্জন করতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত নিরঙ্কুর সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জন করতে পারবে না বলে কেউ কেউ বলছেন।
তবে আদালতপাড়ায় চাউর আছে, আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রতিবছর বারের সদস্যদের পেশাগতসহ ব্যাক্তিগত সুযোগ-সুবিধার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্বরোপ করা হয়ে থাকে। এতে করে যারা আইনী সেবাপ্রাপ্তির জন্য আদালতপাড়ায় বছরের পর বছর ঘুরেন তাদের তেমন কোন লাভ হয় না। সেবাপ্রার্থীরা বলছে, সেবাপ্রাপ্তির জন্য আদালতপাড়ায় প্রতিটি স্তরেই পাহাড়সম অনিয়ম আর দুর্নীতি। তা রোধে সমিতি তেমন ভূমিকা রাখতে দেখা যায় না।
এতে করে বিচারঙ্গনে বছরের পর বছর ন্যায়বিচার প্রাপ্তির আশায় বিচারপ্রার্থী ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। বিচারপ্রার্থীরা বলছেন, আইনজীবী সমিতি চাইলেই কেবল সেবাপ্রার্থীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করে দিতে পারে। এতে করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি অনেকাংশেই কমে আসবে। তবে তা আদৌ হবে কিনা তা কখনই আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধভাবে উপস্থাপন করছেন না। যার কারণে আদালতপাড়ায় বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তির যেমন শেষ নেই, তেমনি ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে তাদের দীর্ঘসূত্রিতা লেগেই থাকছে। ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন, এ বছর থেকে নির্বাচিত সদস্যরা যাতে অল্প সময়ে সেবাগ্রহীতারা সেবা পায় সে বিষয়টি যেনো নজর দেয়।
উল্লেখ্য, এবছর যারা প্রার্থী হচ্ছেন তারা হলেন- সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদে সভাপতি পদে অ্যাড. সাইয়েদুল ইসলাম বাবু, সিনিয়র সহ-সভাপতি গাজী মো. দুলাল মিয়া, জুনিয়র সহ-সভাপতি মো. শাহজাহান আখন্দ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাড. বদরুল আলম চৌধুরী এবং অপরাপর পদে লড়ছেন- ইমান হোসেন টিটু, রেজাউল করিম, রিয়া পারভীন শান্তা মানচুরী, বিশ^জিৎ কর রানা, মাসুদ রানা, আজমীর খান, মো. আবু কাউসার, শাহ-ই-জালাল, শেখ সাদী, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান চৌধুরী ও আবির হোসেন রনি।
সমমনা আইনজীবী ঐক্য প্যানেল সভাপতি পদে অ্যাড. সেলিম আকবর, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম, জুনিয়র সহ-সভাপতি ফরিদ আহমেদ রিপন মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক পদে আবদুল্লাহীল বাকী অপরাপর পদে আছেন- শরীফ মাহমুদ সায়েম, সাজ্জাদুল বোরহান হৃদয়, জহির হোসেন, শাহাদাত সরকার শাওন, মামুন হোসেন মিয়াজী, শফিকুল ইসলাম রনি, মোহাম্মদ আবুল বাশার সুমন, মহিউদ্দিন ফাহাদ, কামরুল হাসান প্রধান, আলাউদ্দিন সৈকত ও আবদুল্লা আল নাকিব।
২৪ জানুয়ারি, ২০২৪।