চাঁদপুরে নাশকতার চেষ্টায় হরতাল সমর্থনকারী ১৩ জন আটক

স্টাফ রিপোর্টার
বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ডাকা সকাল-সন্ধ্যার হরতাল শেষ হয়েছে। জেলার বিভিন্নস্থানে নাশকতার চেষ্টা করলে হরতাল সমর্থনকারী ১৩ জনকে আটক করে পুলিশ। বিএনপি-আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ায় সদরের আশিকাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী আলমগীরসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন।
রোববার (২৯ অক্টোবর) সকাল থেকে শহর ও সদরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ছিল পুলিশের অবস্থান। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। সকাল ৮টার পরে হরতাল বিরোধী একাধিক বিক্ষোভ মিছিল বের করে আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সকাল ৯টার দিকে সদরের বাগাদী ইউনিয়নের চৌরাস্তা এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিল করে ইউনিয়ন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তারা চাঁদপুর-রায়পুর আঞ্চলিক সড়কে টায়ারে আগুন দেয়। পুলিশ গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে এবং আগুনসহ টায়ার অপসারণ করে সড়ক স্বাভাবিক করে।
বিএনপি-আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ায় চাঁদপুর সরকারি কলেজের সামনে জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহার ও ছাত্রদল নেতা স¤্রাটসহ কয়েকজন আহত হয়। সদরের আশিকাটি ইউনিয়নে আহত হয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর সরকার, কল্যাণপুর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহŸায়ক জসিম গাজী, পৌর ১৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা হোসেন শেখ হুসু মেম্বার এবং বাগাদী চৌরাস্তা এলাকায় আহত হয় ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজুসহ কয়েকজন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল হরতাল ডেকেছে। চাঁদপুরে সব ধরনের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। হরতাল পালন করা, আর না করা দুটোই নাগরিক অধিকার। যারা হরতাল চায় না সাধারণ জনগণ তারা যাতে কোন ধরণের ভোগান্তির শিকার না হয় সেজন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছি। পুরো জেলায় পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। জেলা জুড়ে বিভিন্ন স্থানে চেক পোস্ট বসিয়ে পুলিশ কাজ করেছে। আমরা চেষ্টা করেছি কেউ যাতে কোন ধরনের নাশকতা তৈরী করতে না পারে। এরপরও নাশকতার সাথে জড়িত ও চেষ্টাকারী ১৩ জনকে পুলিশ আটক করেছে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির দাবি আদায়ে হরতাল ডেকেছে। হরতালের নামে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি যেন না হয়, সেই লক্ষ্যে নিরাপত্তায় আমরা কাজ করছি। ঢাকায় একটি রাজনৈতিক সংগঠন আমাদের একজন পুলিশ সদস্যকে অত্যন্ত নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমরা পুলিশ বাহিনীর সদস্য হিসেবে সেই শোককে বুকে ধারণ করে অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে চাঁদপুর জেলায় কাজ করছি। যাতে চাঁদপুরে কেউ যেন কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে এবং সাধারণ মানুষের ক্ষতি না হয় সেই জন্য কাজ করছি। যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলছে, ট্রেন নির্দিষ্ট সময় ছেড়ে গেছে। বিভিন্ন দোকানপাট খোলা, কেনাবেচা চলছে আমরা সবাই দেখতে পারছি। দূরপাল্লার গাড়িগুলো ছেড়ে গেছে। কোথাও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াছির আরাফাত, চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শেখ মুহসীন আলম, পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) শামসুল আলম, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমান সুমন, সাবেক সভাপতি শরীফ চৌধুরীসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক ও পুলিশ সদস্যরা।
পরে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ মহড়া দেয়।

৩০ অক্টোবর, ২০২৩।