চাঁদপুরে সব নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে

ইলশেপাড় রিপোর্ট
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর সারা দেশের মতো চাঁদপুরেও সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যের দাম বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশের মতো। এতে সাধারণ মানুষরা পরছে বিপাকে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে সব জিনিসের দাম ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বাজার পরিদর্শন বা পর্যবেক্ষণের কোন কার্যক্রম না থাকায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো ভোক্তাদের পকেট কাটছে। এ বিষয়ে প্রশাসনসহ ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তাদের দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সূত্রে জানা যায়, বাজারের সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দামের ওঠা-নামা করছে। টিসিবি বলছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর গত সপ্তাহে চাল, আটা, ময়দা, ভোজ্যতেল, মশুর ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, শুকনো মরিচ, আদা, এলাচ, ব্রয়লার মুরগি, চিনি ও ফার্মের ডিমের দাম বেড়েছে।
চাঁদপুরের স্থানীয় বাজারে কাঁচা মরিচ, শাকসবজি, মাছ, দেশি মুরগি, ফলমূলসহ অন্য খাদ্যের দামও বেড়েছে সমানতালে। এমনকি গুঁড়া দুধ, সাবান, নারকেল-সরিষার তেলর দামও বেড়েছে এ সময়েই।
বাজারে যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে, মাত্র এক সপ্তাহের সবচেয়ে বেশি বেড়েছে শুকনো মরিচের দাম। যা এখন প্রতি কেজি প্রায় ৫শ’। কাঁচা মরিচের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে তালমিলিয়ে শুকনো মরিচের দাম বাড়ছে।
বাজারে মোটা চালের দাম বেড়ে এখন ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ৫০ টাকার নিচে। একইভাবে চিকন চালের দাম বেড়ে হয়েছে ৬৫ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া খোলা আটা, ময়দা, বোতলজাত সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, পেঁয়াজ, ব্রয়লার মুরগির ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে। আরো বাড়ছে রসুন, আঁদার দামও।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছে, হঠাৎ জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কথা। পাশাপাশি ডলারের দাম বাড়ায় বেশকিছু পণ্যের আমদানি-রপ্তানিতে জটিলতা সৃষ্টি হয়।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল চাল। এরপর তেল, চিনির দাম বৃদ্ধি এবং শেষে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম। এ নিয়ে বিক্রেতারা সবাই একই সুরেই কথা বলছেন।
স্থানীয় পাইকাররা বলছেন, জ্বালানি তেলের কারণে ট্রাকভাড়া বেড়েছে। আগে যেখানে ১৫-১৭ হাজার টাকায় বড় ট্রাক আসতো, সেটা এখন ২৫ হাজার লাগছে। সে হিসাবে বড় ট্রাকে ২শ’ ৫০ বস্তা চাল আসে। অর্থাৎ ১২ হাজার ৫শ’ কেজি। ট্রাক ভাড়া ৭ হাজার টাকা বাড়লে প্রতি কেজি চালে প্রায় ১ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। কিন্তু তারা প্রতি কেজিতে ১০/১৫ টাকা বেশি নিচ্ছে।
চাঁদপুরের ক্রেতারা দাবি করছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নজরদারি নেই। যার কারণে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। দ্রুত প্রশাসনের এ বিষয়ে নজর না দিলে ব্যবসায়ীরা আরো বেশি দামে জিনিসপত্র বিক্রি করলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না।
বর্তমানে চাঁদপুরের সব বাজারে নিত্যপণ্যের দাম যেমন চলছেঃ চাল (মোটা) ৫০-৫৪ টাকা আগে ছিলো ৪৮-৫০ টাকা। চাল (চিকন) ৬৫-৭৮ টাকা আগে ছিলো ৬২-৭৫ টাকা। আটা ৪৫-৫০ টাকা। আগে ছিলো ৪০-৪২ টাকা। ময়দা ৫৮-৭০ টাকা। আগে ছিলো ৫৫-৫৮ টাক। সয়াবিন (বোতল) ১৮৫-১৯০ টাকা। আগে ছিলো ১৮০-১৮৮ টাকা। পাম (খোলা) ১৩০-১৪০ টাকা। আগে ছিলো ১২০-১২৫ টাকা। মসুর ডাল ১০৫-১১০ টাকা। আগে ছিলো ১০০-১১০ টাকা। পেঁয়াজ ৩৫-৫০ টাকা। আগে ছিলো ৩৫-৪০ টাকা। রসুন ১১০-১৩০ টাকা। আগে ছিলো ১০০-১৩০ টাকা। শুকনো মরিচ ৪৩০-৪৮০ টাকা। আগে ছিলো ৩৫০-৪০০ টাকা। আদা ৯০-১২০ টাকা। আগে ছিলো ৮০-১১০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৯০ টাকা। আগে ছিলো ১৫০-১৬৫ টাকা। কক মুরগি ৩০০ টাকা, আগে ছিলো ২২০ থেকে ২৪০টাকা। চিনি ১০০ টাকা। আগে ছিলো ৮০-৮২ টাকা। ডিম (হালি) ৪৫-৫০ টাকা। আগে ছিলো ৩৬-৪০ টাকা।

১৮ আগস্ট, ২০২২।