চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আ.লীগে উত্তাপ!

ইল্শেপাড় রিপোর্ট
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে চাঁদপুরে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়ছে। দলটির শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত তার প্রভাব পড়ছে বলে নেতাকর্মীরা দাবি করছে। মঙ্গলবার (২১ মে) ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ এই রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে। তবে কেউ কেউ আশঙ্কা করছে ভোটকে কেন্দ্র করে ভোটের মাঠ সহিংস হয়ে উঠবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্কতাই পারে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে।
মঙ্গলবারের এই নির্বাচনে মূলত ভোটযুদ্ধের বিপরীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পারস্পরিক ইমেজ রক্ষার লড়াই হয়ে উঠায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে দলটির নেতাকর্মীরা দাবি করছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রখতে জেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখছে বলে জানা গেছে।
চাঁদপুর জেলা নির্বাচন অফিস জানায়, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ৫ জন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন।
তাদের মাঝে চেয়ারম্যান পদে মো. আইয়ুব আলী দোয়াত কলম, মো. হুমায়ুন কবির ঘোড়া, মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম দেওয়ান কাপ-পিরিজ, রাকিব মাঝি আনারস ও মিজানুর রহমান মোটরসাইকেল প্রতিক নিয়ে লড়ছেন।
এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- মো. নরুল হায়দার (টিউবওয়েল), মো. হারুনুর রশিদ হাওলাদার (তালা) ও এবিএম রেজওয়ান (চশমা)। সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ২ জন হলেন- রেবেকা সুলতানা (পদ্মফুল) ও শিপ্রা দাস (ফুটবল)।
চেয়ারম্যান পদে এই ৫ প্রার্থীই জেলা আওয়ামী লীগ ও তার বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পদ-পদবী থাকায় পরস্পর পরস্পরে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে। যাকে কেন্দ্র করে এখন দলটির অভ্যন্তরে দেখা দিয়েছে আস্থার সঙ্কট। তবে শেষ পর্যন্ত তৃণমূল থেকে নেতাকর্মীরা আশা করছিলো জেলা আওয়ামী লীগ পরিস্থতিকে নিয়ন্ত্রণে নিতে প্রার্থীদের মাঝে কোন সমঝোতা করবে। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত না হওয়ায় এখন নির্বাচনকে নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।
এমন আশঙ্কা কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে কোন কোন চেয়ারম্যান প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে নিজ নিজ অবস্থান ব্যাখ্যা করেন এবং নির্বাচনে সহিংসতার কথা প্রকাশ করছেন। যা ভোটারদের মাঝেও কম-বেশি ভীতি ছড়িয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে অতিসম্প্রতি চাঁদপুর সদর ও হাইমচর সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে চাঁদপুর সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের কোন একক প্রার্থী যেমন নেই, তেমনি সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি নিজেও কোন প্রার্থীকে সমর্থন করেননি। ফলে সাধারণ নেতাকর্মীরা এখন দলের ৫ প্রার্থীকে নিয়ে অনেকটাই বেকায়দায় রয়েছে।
তবে আওয়ামী লীগের একধিক সূত্র বলছে, নির্বাচনে মূলত ভোট যুদ্ধ হবে দুই প্রার্থীর মধ্যে তারা হলেন- মো. আইয়ুব আলী (দোয়াত কলম) ও মো. হুমায়ুন কবির (ঘোড়া)। এই দুই প্রার্থীই ইতোমধ্যেই ব্যপক শোডাউনসহ গণসংযোগ করে নিজদের শক্ত অবস্থান জানান দিতে সক্ষম হয়েছেন। যা রাজনৈতিক অঙ্গনে সবার দৃষ্টি কারতে সক্ষম হয়েছে।
সাধারণ ভোটাররা বলছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও আওয়ামী লীগ ছাড়া কোন হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকায় ভোটের প্রতি তাদের আগ্রহ কম। তবে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধ যেনো সহিংস না হয়, সেদিকেই খেয়াল রাখছেন তারা।
চাঁদপুর জেলা নির্বাচন অফিস বলছে, সদর উপজেলা নির্বাচনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১৭ হাজার ১শ’ ১১ জন। ভোট কেন্দ্র ১শ’ ৩৪টি এবং ভোট কক্ষ ১ হাজার ৭টি নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ করা হবে ইভিএম পদ্ধতিতে।

২০ মে, ২০২৪।