নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর
………জেলা প্রশাসক বেগম অঞ্জনা খান মজলিশ
মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
আসন্ন হাজীগঞ্জ পৌরসভা সাধারণ নির্বাচন-২০২০ উপলক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে আচরণবিধি এবং আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনাতয়নে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বেগম অঞ্জনা খান মজলিশ।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা আপনাদের (প্রার্থী) কাছে এসেছি। ইতোমধ্যে ২০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রার্থীর আচরণ দায়িত্বশীল হলে এই কেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ থাকবে না। কারণ, নির্বাচনী পরিবেশ নির্ভর করছে আপনাদের আচরণের উপর।
তিনি বলেন, আপনারা যারা প্রার্থী রয়েছেন, তারা দায়িত্বশীল আচরণ করুন। আর নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। নয়তো আমরা কঠোর হবে। পৌরসভার প্রতি তিনটি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছে। নির্বাচনের দিন আরো ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবে।
অমূলক অভিযোগ দিবেন না উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ দিন, বিধি অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে কোন প্রার্থীর প্রতি অমূলক অভিযোগ দিয়ে বিভ্রান্তিকর পরিবেশ বা প্রার্থীকে হয়রানি করবেন না। আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চাই।
জেলা প্রশাসন ও জেলা নির্বাচন অফিসের আয়োজনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে আচরণবিধি এবং আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ৪৫,৩৪৮ জন ভোটার ২০টি কেন্দ্রে ভোট দিবেন। এই ২০টির মধ্যে ১৬টি কেন্দ্রকে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহিৃত করেছি।
তিনি বলেন, প্রার্থীদের সমন্বয় থাকলে কোন কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ থাকবে না। আমাদের সমন্বয়ে (প্রশাসন, নির্বাচন কর্মকর্তা ও পুলিশ) সুষ্ঠু, সুন্দর একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে কোন ব্যতয় ঘটবেনা। এটা কোন জাতীয় নির্বাচন নয়, স্থানীয় নির্বাচন। সুতরাং পুলিশের পর্যাপ্ত ফোর্স রয়েছে। প্রতি কেন্দ্রে ১৩ জন পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। থাকবে আনসার, র্যাব ও স্ট্রাইকিং ফোর্স।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন ১০০% নিরপেক্ষ পাবেন, সেই নিশ্চয়তা দিচ্ছি। অপরাধী যেই হোক তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে কোন অনিয়ম বা অপরাধ করার সুযোগ নেই। আমরা কে, কি আচরন করছি, তা হাতে থাকা এই মোবাইলের মাধ্যমে প্রকাশ হয়ে যায়। মূহুত্বে সংবাদমাধ্যম অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তা ছড়িয়ে পড়ে। এতে পুলিশের কেউ জড়িত থাকলেও তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সম্প্রতি পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় মামলার কথা উল্লেখ করে মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় হামলাকারীদের চিহ্নিত করে এবং এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। মামলার বিষয়ে অন্য কাউকে হয়রানি করা হবে না বলে তিনি জানান।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রট মোহাম্মদ জামাল হোসেন, রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তোফায়েল হোসেন।
বক্তব্য রাখেন হাজীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানিজ ফাতেমা, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেলিনা আক্তার, হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন রনি। মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আসম মাহবুব-উল আলম লিপন, ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও সাবেক মেয়র আলহাজ আব্দুল মান্নান খাঁন বাচ্চু।
বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য খালেকুজ্জামান শামীম, দৈনিক আজকের দেশকণ্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশক এনায়েত মজুমদার, কাউন্সিলর প্রার্থী রায়হানুর রহমান জনি, সাংবাদিক হাবিবুর রহমান, সাখাওয়াত হোসেন, মোহাসীন ফারুক বাদল, কাজী মনির, সাদেকুজ্জামান মুন্সী, শারমিন সুলতানা মিনু ও মমতাজ বেগম মুক্তা প্রমুখ। সভায় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
১৬ জানুয়ারি, ২০২১।