আবারো ঘন কুয়াশায় শতাধিক লঞ্চ আটকা চাঁদপুরে ৩ লঞ্চের মুখোমুখী সংঘর্ষ


স্টাফ রিপোর্টার :
ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে আবারো দক্ষিণাঞ্চলীয় ও চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী শতাধিক যাত্রীবাহী লঞ্চ চাঁদপুরের বিভিন্ন চরে আটকা পড়েছে। এছাড়া চাঁদপুরের ৩টি লঞ্চ মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। কিন্তু তেমন বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। অপরদিকে কুয়াশার কারণে দক্ষিণাঞ্চলীয় লঞ্চগুলো ৫-৬ ঘণ্টা ও ঢাকা-চাঁদপুরের মধ্যে চলাচলকারী লঞ্চগুলো ২-৩ ঘণ্টা দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছে। নদীর মাঝে আটকে পরে প্রচ- শীতে শিশু, নারী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ বিভিন্ন বয়সের শত-শত যাত্রী সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে ঘন কুয়াশার কারণে এ ঘটনা ঘটে।
লঞ্চ যাত্রী চাঁদপুর মেডিকেল হলের মালিক কবির খান জানান, রাত দেড়টায় হঠাৎ চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী লঞ্চ এমভি আব-এ-জমজমের সাথে বালুবাহী বলগেটের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিকট আওয়াজ শুনে যাত্রীরা আতংকিত হয়ে লঞ্চের মধ্যে ছোটাছুটি করে কমপক্ষে ২০ জন যাত্রী আহত হয়। এ সময় লঞ্চের সামনের অংশে দুমড়ে-মুচড়ে এবং বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র হয়ে যায়। যাত্রীরা চিৎকার করতে থাকে। তাৎক্ষণিক লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জের অদূরে নোঙ্গর করে রাখা হয়। ঢাকা থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসা এমভি রফরফের সাথে রাত ২টায় নদীতে নোঙ্গর করে থাকা আব-এ-জমজম লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। এ সময় আবারো যাত্রীরা আতংকিত হয়ে চিৎকার করতে থাকে। এ সময় অনেক যাত্রী ভয়ে আব-এ-জমজম থেকে রফরফ লঞ্চে উঠে চাঁদপুরের আসার জন্য। কিছু দূর যেতেই কুয়াশার কারণে দেখতে পেরে চলন্ত লঞ্চ রফরফের সাথে বরিশালগামী লঞ্চ এমভি পূবালীর সাথে প্রচ- সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে ৩০ জন যাত্রী আহত হয়। ২টি লঞ্চের সামনের অংশে দুমড়ে-মুচড়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়। পরে যাত্রীদের অনুরোধে ষাটনল এলাকায় লঞ্চগুলো নোঙ্গর করে রাখা হয়। সকাল সাড়ে ৫টায় কুয়াশা কমলে লঞ্চগুলো চাঁদপুরের দিকে ছেড়ে আসে, প্রায় ৩ ঘণ্টা দেরিতে। বুধবার সকালে আহত যাত্রীদের অনেকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
বুধবার চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালে লঞ্চের মাস্টার ও যাত্রীদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, প্রতিটি লঞ্চ মঙ্গলবার দুপুরে ও বিকেলে দক্ষিণাঞ্চলীয় বরিশাল, পিরোজপুর, পাতারহাট, লেতরা, পয়সারহাট, কালাইয়া, ভান্ডারিয়া, কাউখালীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ছেড়ে চাঁদপুরে রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে পৌঁছার কথা থাকলেও নদীতে ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে লঞ্চগুলো সামনের দিকে আসতে পারছিলো না। ফলে প্রতিটি যাত্রীবাহী লঞ্চ সকাল ৮ থেকে ৯টার মধ্যে ৫/৬ ঘণ্টা দেরিতে চাঁদপুর নৌ-টামিনালে পৌঁছে। ঢাকা থেকে মঙ্গলবার লঞ্চগুলো রাত ১২টায় ও ১টায় ছেড়ে ভোর সাড়ে ৩টায় ও ৪টায় চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালে পৌছার কথা থাকলেও লঞ্চ গুলো সকাল ৬টা/৭টায় ২/৩ ঘণ্টা বিলম্বে চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালে এসে পৌছে। এছাড়া অনেক লঞ্চ চাঁদপুর নৌ-সীমানায় ডুবো চরে আটকা পরে।
এ ব্যাপারে এমভি আব-এ-জমজম লঞ্চের এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি লঞ্চ ৩/৪ ঘণ্টা পর চাঁদপুর ঘাটে আসে। ২টি লঞ্চের ষংঘর্ষের পর যাত্রীদের অনুরোধে লঞ্চটি নোঙ্গর করে রাখা হয়। তবে অনেক যাত্রী আহত হয়েছে। তাদের প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর বন্দর কর্মকতা ও উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কুযাশার কারণে লঞ্চগুলো দেরিতে এসেছে। এতে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে। কুয়াশা দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে চলাচল করলে দুর্ঘটনা ঘটতো। ২টি লঞ্চের সংঘর্ষের ঘটনা আমার জানা নেই। এ রকম খবর আমাকে কেউ জানায়নি।