এস এম সোহেল
‘৯০ এর গণ-অভ্যুত্থান ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে চাঁদপুর শহরে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ জিয়াউর রহমান পাটওয়ারী রাজু’র ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯০ সালের ৩ ডিসেম্বর সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে টানা ৬ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে জিয়াউর রহমান পাটওয়ারী রাজু মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। তার মৃত্যুর সংবাদ শুনে চাঁদপুর শহরে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভে ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় ধ্বংসলীলা। পরে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে উত্তপ্ত দাবানল থেমে যায়।
রাজুর শাহাদাত দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার শহীদ রাজু স্মৃতি সংসদ, কলেজ ছাত্রলীগ, কলেজ ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠন তার সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা জানাবে। এছাড়া শহীদ রাজুর পরিবারের পক্ষ থেকে পারিবারিকভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী গণ-আন্দোলন যখন তুঙ্গে সে সময় চাঁদপুর শহরের সরকারি কলেজ থেকে ছাত্র ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলে কলেজ ছাত্রলীগ কর্মী এবং মেধাবী ছাত্র জিয়াউর রহমান পাটওয়ারী মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন। মিছিলটি কলেজ থেকে বের হয়ে চিত্রলেখার মোড়ে আসামাত্র সে সময়কার ওসি সৈয়দ খবিরুজ্জামানের নির্দেশে পুলিশ মিছিলকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে জিয়াউর রহমান পাটওয়ারী রাজু মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ২৮ নভেম্বর সকাল ১১টায় গুলিবিদ্ধ রাজুকে ছাত্ররা ধরে দ্রুত চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসে। ওই সময় চিকিৎসকদের পরামর্শে অগণিত ছাত্র রক্ত দিয়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা চালায়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ৩ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
শহীদ জিয়াউর রহমান পাটওয়ারী রাজু’র জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে এবং সব ছাত্র সংগঠনের সিদ্ধান্তক্রমে শহীদ জিয়াউর রহমান পাটওয়ারীকে সম্মানের সাথে চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে অবস্থিত শহীদ মিনারের পাশে সমাধিস্থ করা হয়।
শহীদ জিয়াউর রহমান পাটওয়ারী রাজু’র বাবার নাম ফজলুল রহমান পাটওয়ারী। মা ঝর্ণা বেগম। ৪ ভাই-বোনের মধ্যে রাজু ছিলো সবার বড়। বিগত ২০১৪ সালে রাজুর বাবা ফজলুল রহমান পাটওয়ারী স্বস্ত্রীক হজ পালন করেন এবং মদিনায় হজ পালন শেষে ইন্তেকাল করেন।
১৯৭৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজু জন্মগ্রহণ করে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ১৬ বছর ১০ মাস ২ দিন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও সে সময়কার বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা চাঁদপুরে সফরে আসলে পাটোয়ারী বাড়ির প্রতিটি ঘরে ঘরে সাক্ষাৎ ও দেখা করার পর শহীদ জিয়াউর রহমান পাটোয়ারী রাজুর মা-বাবা ও ভাই-বোনের সাথে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে তাদেরকে সান্তনা দিয়ে যান। ১৯৯৯ সালের ২৮ নভেম্বর ও ২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল চাঁদপুরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা সরকারি সফরে এসেও রাজুর পরিবারের খোঁজ-খবর নেন।
- Home
- প্রথম পাতা
- চাঁদপুরের শহীদ রাজুর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী