চাঁদপুরে গণফোরামের কর্মীসভায় সাবেক সাংসদ মোস্তফা মহসিন মন্টু আমরা চাই গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচন

চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসিন মন্টু। পাশে উপস্থিত কর্মীবৃন্দ। -ইল্শেপাড়

এস এম সোহেল
চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৩টায় জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য ও গণফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসিন মন্টু।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালে যে মুক্তিযুদ্ধ অর্জন হয়েছিলো সেটা গণতন্ত্রের জন্য হয়েছিলো। সেই গণতন্ত্রের ভেতর দিয়ে সুষম বন্টন শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রশাসনিক সর্বস্তরের জবাবদিহিতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং জনগণের দোরগোড়ায় ন্যায়বিচার পৌঁছে দেয়া। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই গণফোরাম কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আজ কোন দেশে বসবাস করছি। দেশের ৩ মন্ত্রীকে হাইকোর্ট জরিমানা করার পরও তারা কিভাবে মন্ত্রীত্ব থাকে। বিশ্বের ইতিহাসে এটা বিরল একটা দৃষ্টান্ত। আমরা এদেশে গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা চাই। দেশটি যেভাবে চলছে তা এভাবে চলতে পারে না। পরিবর্তন প্রয়োজন। এ দেশ তলাবিহীন হয়ে যাচ্ছে। আর আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে আর সেটা হবে জনগণের ঐক্য। আগামি দিনে ড. কামালের নেতৃত্বে আমরা দেশের একটি বিরাট পরিবর্তন করি- এই হোক আমাদের আহ্বান।
তিনি আরো বক্তব্যে বলেন, এ দেশের কৃষকদের ঋণের জন্য জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে। তাদের জেলে যেতে হচ্ছে। আর এ দেশের শিল্প-কারখানার মালিকরা কোটি কোটি টাকা ঋণ নেয়ার পরও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। তাদের ঋণ বছর বছর নবায়ন করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের ঋণের সুদ মওকুফ করা হচ্ছে কি করে তা জনগণ জানতে চায়।
তিনি বলেন, আমরা আছি কোথায়? জাতীয় সংসদ হল জনগণের বৈঠকখানা। আর জনগণ হল এ দেশের মালিক। বৈঠকখানায় বসেন জনগণের প্রতিনিধি। যেই দেশে গণতন্ত্র নেই। সেই দেশে এই বৈঠকখানার কোন মূল্যই নেই। তাহলেই গণতন্ত্র ফিরে আসবে। আমরা চাই ৭১ এর গণতন্ত্র এবং ৭০ এর নির্বাচনের রায়কে কার্যকর করার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামকে স্মরণ করে রাখা। আমাদের দেশের ৩টি রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তারা ৮৮, ৯৬ ও ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছেন। দেশের সাধারণ জনগণ তাদের নিজস্ব ভোট দেয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ড. কামাল হোসেন এ ধরনের নির্বাচন থেকে সবসময় বিরত ছিলেন এবং এ ধরনের নির্বাচন তিনি কখনই করেননি এবং করবেন না। আমরা চাই এ দেশে গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচন।
জেলা গণফোরামের সভাপতি অ্যাড. সেলিম আকবরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় গণফোরামের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ হ ম সফিক উল্যা, যুব গণফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কাজী হাবিব, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক খান সিদ্দিকুর রহমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক, সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন, যুব নেতা অখিল কর্মকার।
জেলা গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বাবুল ও আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. আনোয়ার হোসেনের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা গণফোরামের সহ-সভাপতি খোকন পোদ্দার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা বাসুদেব মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদ হোসেন, শহর গণফোরামের সভাপতি রুহল আমিন হাওলাদার, শহর গণফোরামের সিনিয়র নেতা আবুল খায়ের, জেলা যুব গণফোরামের সভাপতি নুরনবী, সাধারণ সম্পাদক হাজি আশ্রাফ বাবু, শ্রমিক গণফোরামের সভাপতি শহীদ বকাউল, হাজীগঞ্জ উপজেলা গণফোরামের আহ্বায়ক মো. রনি, জেলা মহিলা গণফোরামের সাধারণ সম্পাদিকা শিল্পী বেগম, গণফোরাম নেতা ফারুক হোসেন, গণফোরাম নেতা আবুল কাশেম মিলন, বিজয় মজুমদার প্রমুখ। কর্মীসভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা, থানা, শহর ও পৌর কমিটির নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা।