চাঁদপুরে চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি

নিয়মিত অভিযান না থাকায়

ইল্শেপাড় রিপোর্ট
চাঁদপুর শহরে সাম্প্রতিক সময়ে চোরের উপদ্রব বেড়ে গেছে। দিন-দুপুরেই শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে চুরি সংগঠিত হচ্ছে হরহামেশেই বলে সর্বমহলে অভিযোগ উঠছে। ফলে শহরের বাসিন্দাদের মাঝে চুরি আতংক নিয়ে দিন পাড় করতে হচ্ছে। কখনো কখনো সংঘবদ্ধ চোরের দল আবার রাতের আঁধারেও এমন অপরাধ কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে শহরবাসীর অভিযোগ।
দিনে-রাতে, সন্ধ্যায় বা দুপুরে বাসায় লোক থাকুক বা না থাকুক চোরেরা বিভিন্ন বাসায় হানা দিচ্ছে। কিন্তু এসব চুরি প্রতিরোধে কার্যত কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না পুলিশ এবং তাদের সহযোগী কমিউনিটি পুলিশ। ৪/৫ মাস ধরেই চোরের দল শান্তির শহর চাঁদপুরের শৃঙ্খলা নষ্ট করে চলছে। শহরের বেশ কয়েকজন বিজ্ঞজন জানান, ছিঁচকে বা ক্ষুদে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীরাই মূলত এই চুরির কাজে লেগেছে। পুলিশ প্রশাসনের উচিৎ তাদের চিহ্নিত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া।
শহরে বসবাসকারী আবাসিক বাস-বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ারা দাবি করছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযান না থাকায় চুরির মতো অপকর্ম বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া গত রমজান মাসে দেশব্যাপঅ মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকায় ও ক্রসফায়ারে মাদক বিক্রেতাদের হত্যা করায় ছোট ছোট মাদক কারবারীরা তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেয়। ফলে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে চুরি-ছিনতাইয়ের দিকে মনোযোগ দেয়। যার কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে শহরের অভ্যন্তরে চুরির উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা গেছে, শহরের বিষ্ণুদী আবাসিক এলকায় চাঁদপুর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খানের বাসায় দুর্ধর্ষ চুরি সংগঠিত হয়েছে। এরপর শহরের হাসান আলী সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় লাগোয়া মহিলা কলেজ রোডে বসবাসকারী সাংবাদিক রহিম বাদশার ভাড়া বাসা থেকে চোরের দল মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায়। এছাড়া শহরের ব্যস্ততম এলাকা হাকিম প্লাজা লাগোয়া সানন্দা প্লাজার পেছনে ডা. জমির আহমেদের বাসার ভাড়াটিয়া সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান সুমনের বাসায় সন্ধ্যার সময় চোরের দল চুরির চেষ্টা চালায়।
শহরবাসী দাবি করছে, চাঁদপুরের বিদায়ী পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের বিদায়ের পর শহরে চুরি ও মাদক কারবারীদের দৌরাত্ম্য অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই মাদক, যৌতুক, নারী-শিশু নির্যাতন, চুরি-ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন। এজন্য তিনি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করায় শহরবাসীর মাঝে অনেকটাই স্বস্তি ফিরে আসে। তখন স্বাভাবিক আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি হয় বলে দাবি শহরবাসীর।
বর্তমানে সেই ধরনের নিয়মিত অভিযানে অনেকটাই ভাটা থাকায় চোরের দল, ছিনতাইকারী ও মাদকসেবীরা সংঘবদ্ধভাবে চুরি-ডাকাতিসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছে। ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে অনেকটাই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরবাসী দাবি করছে শহরে বসবাসকারী মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে আইন-শৃঙ্খলা-বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানের বিকল্প নেই। দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না নিলে শহরে চোরদের চুরির অভিযান আরো বেড়ে যাবে। মানুষের স্বাভাবিক বসবাস বিঘিœত হবে।