চাঁদপুরে ডাকাতি হয়ে যাচ্ছে ডাকাতিয়া নদী

এস এম সোহেল
নদীবিধৌত ইলিশের বাড়ি জেলা চাঁদপুর। পদ্ম-মেঘনার কুল ঘেঁসে গড়ে উঠা এই জেলার বুক চিরে বয়ে গেছে চিরশান্ত নদী ডাকাতিয়া। সুন্দরের পিপাসুজনের হৃদয় ডাকাতি করা শান্ত এই নদীটি নিজেই এখন প্রকাশ্যে ডাকাতি হয়ে যাচ্ছে। দু’পাড়ের অসাধু দখলদাররা দিনে দিনে নদীটি তার ঐতিহ্য আর জৌলুস হারাতে বসেছে। দীর্ঘসময় ধরে এর দুই পাড়ে অবৈধ দখলের মহোৎসব বন্ধ না হওয়ায় এর আয়তন ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে আসছে। অথচ এসব দেখার যেন কেউ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন ত্রিনদীর মোহনা (পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া) থেকে শুরু হয়ে এই নদীটি জেলার সদর উপজেলা, ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ উপজেলাসহ বিভিন্ন অংশে বহমান এই নদী। যার বিভিন্ন অংশের দুই পাড়ে দখল করে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি গড়ে তোলা হয়েছে।
কোথাও কোথাও আবার অবৈধ ডগইয়ার্ড, ইট-বালুসহ বিভিন্ন মালামালের ব্যবসা করা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ নিজেদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি দাবি করে বহুতল বাড়িঘর তৈরীর করে রেখেছেন। চাঁদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান বড়স্টেশন, পুরাতন লঞ্চঘাট, ৫নং ঘাট, ৩নং ঘাট কয়লাঘাট, ১০নং ফেরি ঘাট, চৌধুরী ঘাট ও নতুন বাজার এলাকার নদীর দু’পাড়ে শত শত পাকা বিল্ডিং ও পাকা টিনসেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে বহু আগেই।
এছাড়া ফরিদগঞ্জ ও হাজীগঞ্জ উপজেলাসহ বিভিন্ন অংশে পাড় দখল অব্যাহত রয়েছে। ফলে এসব শহর এলাকার পানি নিষ্কাশনে ব্যবস্থা অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। আর নাব্যতা সংকটে এই নদীতে লঞ্চ চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। তাছাড়া এ নদীকে ঘিরে অসংখ্য কৃষি ফসলের ভূমি হুমকি মুখে পড়ছে। এ বিষয়ে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বহুবার সংবাদ প্রকাশ হলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ এসব যেনো দেখেও না দেখার ভান করছে।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে বিআইডাব্লিউটিএ কর্মকর্তা বলছেন, অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই তাদের নোটিশ দেয়া হবে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। নয়তো একটা সময় জেলার মানচিত্র থেকে নদীটি দখলদারদের হাতেই ডাকাতি হয়ে যাবে।