স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর পুরাণবাজার দাসপাড়া এলাকায় সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের প্রতিমা এবং স্থাপনা ভাঙচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় চাঁদপুর প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রনজিত কুমার রায় চৌধুরী ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ।
এসময় বক্তব্য রাখেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অ্যাড. বিনয় ভূষণ মজুমদার ও অজয় কুমার ভৌমিক।
প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, সাবেক সভাপতি শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, বিএম হান্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মিলন, সোহেল রুশদী, দৈনিক মতলবের আলোর প্রধান সম্পাদক কে এম মাসুদ প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা রাধা গোবিন্দ গোপ, তপন সরকার, অজিত সাহা, জেলা জন্মষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি গোপল সাহাসহ আরো অনেকে।
সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, সাবেক সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, কাজী শাহাদাত, গোলাম কিবরিয়া জীবন, শরীফ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, দৈনিক ইল্শেপাড়ের প্রধান সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আল ইমরান শোভন, সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌসসহ স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিকরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত বৃহস্পতিবার রাতে এক দল দুর্বৃত্ত মন্দিরে হামলা চালায়। এসময় প্রতিমা ভাঙচুরসহ লুটপাট চালায় তারা। এই ঘটনায় খবর পেয়ে আশপাশের মুসলমানরা ছুটে আসেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে দাঁড়ান। ঘটনার সাথে জড়িত ফরিদুল ইসলাম দিদারসহ ৫ জনকে পুলিশ আটক করেছে। এসময় তারা মন্দিরে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিচারের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করেন, চাঁদপুর শহরের শত বৎসরের বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার ভয়াবহ এ ঘটনার সংবাদ শুনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান ও পুলিশ সুপার জিহাদুল কবিরকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি/সম্পাদক ও সাংবাদিক সমাজসহ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী লোকজনও ছুটে আসেন।
আরো উল্লেখ করা হয়, স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে এ পর্যন্ত দেশের কোন কোন স্থানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অবনতি, মন্দিরসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও হামলার শিকার হলেও চাঁদপুর শহর ছিল এদিক দিয়ে সম্পূর্ণ নিরাপদ। আমরা স্বগর্বে বলেছি চাঁদপুর শহর হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শহর। যেখানে ধর্মীয় বিবেধ নেই, হানাহানি নেই, আছে সব ধর্মের মানুষের সাথে হৃদয়ের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক। তাই আমাদের পূজায় আর মুসলিম ভাইদের রোজায় আমরা একে অপরের সাথে মিলেমিশে হয়ে যাই একাকার। সেখানে রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতকারীরা আমাদের দেবালয় ভেঙে দিয়ে আমাদের হৃদয়কে চুরমার করে দিয়েছে। আমাদের মাঝে বিরাজমান শান্তি ও দীর্ঘদিনের লালিত সম্প্রীতি একরাতে নিমিশেই শেষ করে দিয়েছে এ শহরেরই বাসিন্দা ফরিদ দিদার ও তার লোকজন। ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে ঘটনার নিন্দা করেছে নেতৃবৃন্দ।
- Home
- প্রথম পাতা
- চাঁদপুরে মন্দিরে হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন