ইল্শেপাড় রিপোর্ট
চাঁদপুরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার ৫টি আসনেই জয় চায় আওয়ামী লীগ। ভোটের দিন যতই কাছে আসছে ততোই ভোটারদের কাছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে জেলার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট চাইছেন। ফলে দলটির সব পর্যায়ের নেতারাই আশা করছেন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এ জেলার ৫টি আসনেই জয়লাভ করবে আওয়ামী লীগ।
চাঁদপুরে নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রার্থীদের মাঝে দলীয় প্রতীক প্রদানের পরে জেলার সর্বত্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতি’ই দলটির জয়ের পথকে প্রতিনিয়তই অনেকটা উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এ নিয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মী ও সমর্থকরা উজ্জীবিত হয়ে উঠছে। তার আশা করছে তাদের জয়ের পথে প্রতিদ্বন্দ্বী অপর রাজনৈতিক দলগুলো তেমন প্রভাব ফেলতে পারবে না।
এদিকে মাঠ পর্যায়ে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, গত এক দশকে দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ সরকারের দৃশ্যমান উন্নয়নই ভোটারদের ও সরকারের ধারবাহিকতায় অগ্রগামী করছে সর্বমহলে। ফলে এবারের নতুন ভোটাররাও তাদের পছন্দের প্রতীক নৌকাকেই বিজয়ী করতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। ভোটাররা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের এমন উন্নয়নের ধারবাহিকতা সব মহলকেই সরকারেরও ধারাবাহিকতার প্রত্যাশার কথাই বলছেন।
ফলে যেখানেই ছুটছে নৌকার প্রার্থী কিংবা সমর্থকরা সব স্থানেই ভোটাররা তাদের সাদরেই গ্রহণ করছে। যা ইতোপূর্বের যে কোন জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় বেশি বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিমত দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও আগামি ৩০ ডিসেম্বর নৌকার বিজয় অনেকটাই নিশ্চিত হিসেবেই বিবেচনা করছেন।
বিপরীতে বিএনপি সমর্থিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা ভোটের মাঠে তাদের অবস্থান কতটা দৃঢ় করতে পারবে তা তাদের নেতাকর্মী কিংবা সমর্থকরাও বুঝতে পারছে না এখন পর্যন্ত। নির্বাচনের প্রাক প্রস্তুতিতেই বিএনপি অনেকটা অগোছালো পরিস্থিতিতে রয়েছে বলে দলটির বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে দলটির অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে তৃণমূল অনেকটাই হতাশ হয়ে পরছে।
এমন পরিস্থিতিতে ঐক্যফ্রন্ট ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের বিপরীতে তাদের সাংগঠনিক শক্তিমত্তার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল মনে করছে না। আবার কেউ কেউ বলছে আওয়ামী লীগ তাদের শক্তিমত্তার প্রদর্শন করায় সেটা অনেকটাই দৃশ্যমান। মূলত ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ ভোটাররাই নির্ধারণ করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসমর্থন কতটুকু।
তবে রাজনীতির মাঠে এমন মতের সাথে একমত নয় আওয়ামী লীগের সমর্থকরা। তাদের দাবি ৩০ ডিসেম্বর ভোটাররা উন্নয়নের প্রতীক নৌকাকেই ভোট দিবে। কারণ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীরা ভোটের মাঠে তাদের জানান দিতে যেমন ব্যার্থ হয়েছে, তেমনি ভোটাররাও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর বিপরীতে তাদের অবস্থানের প্রতিফলন ঘটাবে। যদিও ভোটের সময় আর মাত্র এক সপ্তাহ আছে। এতেই জেলার রাজনৈতিক শক্তি পরীক্ষার জানান হবে ভোটের মাধ্যমে।
চাঁদপুরের সচেতন মহল বলছে, জেলার রাজনীতির যে সৌহার্দ্যতা রয়েছে তা যদি আগামি ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব দল ধরে রাখে তাহলে যে দলই জয়লাভ করুক মূলত জয় হবে গণতন্ত্রের। আর ভোটাররাও প্রত্যাশা করছে ভোটের দিন তাদের পছন্দের প্রতীকেই ভোট দিতে চায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই। এজন্য তারা সরকারি দল আওয়ামী লীগের কাছেই বেশি প্রত্যাশা করছে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায়ের ক্ষেত্রে।
চাঁদপুরের ৫টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটার ১৭ লাখ ৫০ হাজার ৫শ’ ১৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ লাখ ৯১ হাজার ৬শ’ ১ জন ও নারী ভোটার ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৯শ’ ১৪ জন।
এর মধ্যে চাঁদপুর-১ (কচুয়া) সংসদীয় আসনে নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৯শ’ ৭৩ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৯ হাজার ৭শ’ ৭৫ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ১শ’ ৯৮ জন।
চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) সংসদীয় আসনে নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুয়ায়ী মোট ভোটার ৩ লাখ ৮২ হাজার ৮শ’ ৩৯ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৩ হাজার ৫শ’ ১৫ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩শ’ ২৮ জন।
চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর-হাইমচর) সংসদীয় আসনে নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ ভোটার তালিকানুযায়ী মোট ভোটার ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪শ’ ৪৩ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৫ হাজার ৬শ’ ৯০ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ১ হাজার ৭শ’ ৫৩ জন।
চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) সংসদীয় আসনে নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ ভোটার তালিকানুযায়ী মোট ভোটার ৩ লাখ ১ হাজার ৮শ’ ৭৩ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৪ হাজার ৪শ’ ৩৭ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৪৭ হাজার ৪শ’ ৩৬ জন।
চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) সংসদীয় আসনে নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুয়ায়ী মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩শ’ ৮৭ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৮ হাজার ১শ’ ৮৪ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯৫ হাজার ২শ’ ৩ জন।
- Home
- প্রথম পাতা
- চাঁদপুরে ৫ আসনে’ই জয় চায় আ.লীগ
Post navigation

