চাঁদপুর প্রেসক্লাব সাংবাদিকদের পরিচিতি ও মতবিনিময়

 

আমার কাজটিই হচ্ছে চ্যালেঞ্জিং, তাই চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করছি
………….নবাগত জেলা প্রশাসক বেগম অঞ্জনা খান মজলিশ
শাহ্ আলম খান
চাঁদপুরের নবাগত জেলা প্রশাসক বেগম অঞ্জনা খান মজলিশের সাথে প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন নবাগত জেলা প্রশাসক বেগম অঞ্জনা খান মজলিশ।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে এবং চাঁদপুরে কাজ করার সুযোগ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আপনাদের ৫০ বছরের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান দেখে ভালো লেগেছে। আপনারা একে অপরের প্রতি যে সম্মান দেখিয়েছেন তাতে আমি মুগ্ধ হয়েছি এবং আরো ভালো লেগেছে সুন্দর ও গুছিয়ে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করার জন্য।
জেলা প্রশাসক বলেন, আমি বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে শুনেছি- এ নারী কর্মকর্তা কি ঠিকমত দায়িত্ব পালন করতে পারবে? আমি নিজেকে কখনও নারী কর্মকর্তা হিসেবে দেখি না, আমি সবসময়ই নিজেকে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দেখি।
তিনি আরো বলেন, ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে দেশটি স্বাধীন হওয়ায় আজ আমি ডিসি হতে পেরেছি। জেলা প্রশাসক হচ্ছে দেশের কেন্দ্রিয় সরকারের একজন প্রতিনিধি। আমি সাভারের মেয়ে হলেও ঢাকার বাইরে কাজ করেছি সুনামের সাথে। নারী হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজ করে সাফল্য পেয়েছি। আমার কাজটিই হচ্ছে চ্যালেঞ্জিং। তাই চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করছি। জীবনের প্রথমে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে অস্ত্র লুটের ঘটনা উদঘাটন করে অস্ত্র উদ্ধার করেছিলাম এবং আইডেন্টিফাই করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাথে আমাদের সম্পর্ক আত্মীয়ের মত। চাঁদপুরের সাংবাদিকরা ইতিবাচক কাজের সাথে জড়িত বলে আমি মনে করি। সাংবাদিকরা প্রশাসনকে সব সময় সহযোগিতা করে। তাদের সহযোগিতা আমি চাই। আগের জেলা প্রশাসকের রেখে যাওয়া কাজগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো।
চাঁদপুরের মানুষ সম্পর্কে তিনি বলেন, নদী পাড়ের মানুষ অনেক সহনশীল হয়। সমুদ্র পাড়ের মানুষ হিংস্র হয়। চাঁদপুরের মানুষ আমার দৃষ্টিতে সহনশীলই হবেন এবং তারা আইন-শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলে আমি জানতে পেরেছি।
তিনি আরো বলেন, কাজ করার ইচ্ছা আছে তার জন্যে এ পদ একটা গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম। এ জায়গা থেকে জনগণের সেবা করার অনেক সুযোগ রয়েছে। আমি সবসময়ই ইতিবাচক চিন্তা করি। আমার মূল কাজ হলো এ এলাকার উন্নয়ন। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে যে পরিকল্পনা রয়েছে, তাকেই আমি এগিয়ে নিয়ে যাবো ইনশাল্লাহ্। পর্যটন নগরী করতে জেলা প্রশাসকের যে দায়িত্ব রয়েছে, আমি তা অবশ্যই পালন করবো। বস্তুনিষ্ঠ ও ইতিবাচক সাংবাদিকতা নিয়ে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি। এককভাবে ভালো কাজ করা সম্ভব না। যার যার দায়িত্ব নিজ জায়গা থেকে পালন করলে স্বপ্নের চাঁদপুর গড়ে তুলতে পারবো। স্বপ্নের চাঁদপুর, সুন্দর চাঁদপুর আমি কামনা করছি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামানের পরিচালনায় পরিচিতি ও মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, গোলাম কিবরিয়া জীবন, সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন, সোহেল রুশদী, এএইচএম আহসান উল্লাহ, সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ জালাল চৌধুরী, সাবেক সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, শরিফ চৌধুরী, অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আল ইমরান শোভন, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি এমএ লতিফ প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জামাল হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অসীম চন্দ্র বনিক, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান মানিক, ইমরান-মাহমুদ-ডালিম, দৈনিক ইল্শেপাড়ের যুগ্ম-সম্পাদক ও মানবকণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি শাহাদাত হোসেন শান্তসহ কর্মকর্তাবৃন্দ।
সভার আগে নবাগত জেলা প্রশাসক বেগম অঞ্জনা খান মজলিশকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ। সাথে সাথে জেলা প্রশাসক নিজেও প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহ ও পবিত্র গীতা পাঠ করেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক লক্ষন চন্দ্র সূত্রধর।
৭ জানুয়ারি, ২০২১।