চোর হলেও ঈমানদার বটে!

শওকত আলী
তিনি চোর, ছিনতাইকারী, মাদক সেবক ও বিক্রেতা হলেও একজন সাচ্চা ঈমানদার- বলে হাসির ছলে দাবি করেছেন পুলিশ সদস্য ও উপস্থিত এলাকাবাসী। তিনি ইসলাম ধর্মের অনুসারী হওয়ায় পরকালের চিন্তা ও আপন ছোট ভাইকে চুরি ও ছিনতাই করা টাকা দিয়ে আরবি শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিয়েছেন বলে চোর চক্রের সদস্য ও ছিনতাইকারী শোবরাব গাজী জানিয়েছেন।
জানা যায়, চাঁদপুর শহরের কমিউনিটি পুলিশ অঞ্চল-৪ এর টহল সদস্য সোহেল মিজি ও মো. জাকির গাজী গত বুধবার গভীর রাত অনুমান ২টায় অভিযানকালে মৈশাদী গাজী বাড়ির মৃত শফিক গাজীর ছেলে এলাকার চিহ্নিত ছিনতাইকারী, মাদক বিক্রি ও সেবনকারী এবং চোর চক্রের সদস্য মো. শোহরাব হোসেন গাজী ওরফে শোহরাব (১৮) কে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করে চাঁদপুর মডেল থানায় সোপর্দ করে।
পুলিশ তাকে বুধবার বিকেলে আদালতে পাঠালে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয় বলে ওসি মোহাম¥দ আব্দুর রশিদ নিশ্চিত করেন।
শোহরাবের সাথে চাঁদপুর মডেল থানায় কথা হলে এক পর্যায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সে বলে উঠে, আমার বিরুদ্ধে মামলা দিবেন না, আমি আর এ কাজ করবো না। আমি রিকসা চালিয়ে খাবো! আমি জেলে চলে গেলে আমার ছোট ভাইকে কে দেখবে?
আমার মা অন্যত্র বিয়ে করে চলে গেছে। আবার বাবা থেকেও নেই। সেও বিয়ে করে রাঙ্গামাটি থাকে। আমি আর আমার ছোট ভাই বাড়িতে থাকতাম। এখন আমি ভাঙ্গারি সুমনের সাথে ভাঙ্গারি কাজ করে আমার ভাইকে মাদ্রাসায় পড়াই। তার নাম কি জানতে চাইলে বলে, তার নাম কামরুল হোসেন সবুজ গাজী (১৩)।
সে বাস টার্মিনাল স্বর্ণখোলা রোডের মাদ্রাসায় ৪র্থ শ্রেণিতে আরবিতে পড়াছে। আমি তার একমাত্র অভিভাবক। আমার উপার্জনের টাকা দিয়ে তাকে পড়ালেখা করাই। আমাকে ছেড়ে দেন, আমি আর এসব কাজ করবো না, রিকসা চালিয়ে খাবো। এসময় পুলিশ ও আমজনতা অনেকে বলেন, সে খারাপ হলে কি হবে, সে একজন সাচ্চা মুসলমান ও ঈমানদার। সে নিজে শিক্ষিত হতে পারেনি বলে তার ভাইকে শিক্ষা অর্জন করানোর চেষ্টা করছে।

২৫ নভেম্বর, ২০২১।