শরীয়তপুর ব্যুরো :
শরীয়তপুরের সখিপুর থানার ডিএমখালী ইউনিয়নের চর-চান্দা দেওয়ান কান্দিতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নুরে আলম (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ সময় উভয় গ্রুপের আরো ১০ জন আহত হয়।
আহতদের ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ৫ ডিসেম্বর বিকেল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নূরে আলম ডিএম খালী ইউনিয়নের চরচান্দা দেওয়ান কান্দি গ্রামের বাসিন্দা মোস্তফা দেওয়ানের ছেলে।
এ ঘটনায় পুলিশ ৫ জনকে আটক করেছে। নিহহের বাবা মোস্তফা দেওয়ান সখিপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
নিহতের স্ত্রী সাথী বেগম জানান, আমার শ্বশুর মোস্তফা দেওয়ান ও তার চাচাতো ভাই মোয়াজ্জেম দেওয়ানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার সালিস হয়, কোনো সুরাহা হয়নি। মঙ্গলবার বিকালে মোয়াজ্জেম দেওয়ান বিরোধীয় জমিতে ছাগল চড়াতে গেলে মোস্তফা দেওয়ান ও তার লোকজন বাধা দেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। উভয়পক্ষের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের মোস্তফা দেওয়ান, আর্শেদ আলী দেওয়ান, নূর মোহাম্মদ দেওয়ান, ফয়সাল দেওয়ান, শাহ আলম দেওয়ান, হনুফা বেগম, তানিয়া আকতার, সিরিয়া আকতার, ফারুক দেওয়ানসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ সময় কর্তব্যরত ডাক্তার আহত নুরে আলম দেওয়ানকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
এ ব্যাপারে নিহতের বাবা মোস্তফা দেওয়ান বাদী হয়ে সখিপুর একটি মামলা করেছেন। সখিপুর থানা পুলিশ আমাতুন নেছা, মোয়াজ্জেম হোসেন দেওয়ান, দুলাল সরদার, আহসান দেওয়ান ও ইসহাক দেওয়ানকে আটক করে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান জসীম মাদবর ও অন্যান্যদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরে শরীয়তপুরের সখিপুর থানার ডিএম খালী ইউনিয়নে দেওয়ান কান্দির বাসিন্দা মোস্তফা দেওয়ান ও মোয়াজ্জেম দেওয়ানের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার সালিস হলেও কোন সুরাহা হয়নি। ঐদিন বিকেল ৩টার দিকে মোয়াজ্জেম দেওয়ানের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মোস্তফা দেওয়ানের লোকজনের ওপর আতর্কিত হামলা চালায়। এতে মোস্তফা দেওয়ানের ছেলে নূরে আলমসহ দু’গ্রুপের আরো ১০/১২ জন আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় রাতে নূরে আলমকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়। আহতের ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকের ভর্তি করা হয়েছে।
ডিএম খালী ইউপির চেয়ারম্যান জসীম মাদবর বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে ওই জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল কিন্তু স্থানীয় লোকজনের কারনে অনেক চেষ্টার পরও আমরা সমস্যার সমাধান করতে পারিনি।
এ বিষয়ে সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে শরীয়তপুর পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের আটকে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।