প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ধর্ষণ চেষ্টার সাজানো মামলায় মাদ্রাসা ছাত্র কারাগারে

স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নে সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ধর্ষণের চেষ্টার সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটে ইউনিয়নে দক্ষিণ বালিয়া গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডের খন্দকার বাড়িতে। সাজানো মামলায় ১৬ বছরের হাবিবুল্লাহ নামের মাদ্রাসা ছাত্র কারাভোগ করছেন বলে জানা যায়।
সম্পত্তিগত বিরোধের ঘটনায় মনির খন্দকার নাটক সাজিয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয় ও মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ সুপার কার্যালয় এসআই মনি বেগম ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে উভয় পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয় হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ করেন। মনির খন্দকার পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নির্দেশনা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রদর্শন করে মডেল থানায় ধর্ষণের চেষ্টায় একটি সাজানো অভিযোগ করে মামলাটি রুজু করান। সেই মামলার ভিত্তিতে বুধবার রাতে মডেল থানার পুলিশ অভিযুক্ত মাদ্রাসার ছাত্র হাবিবুল্লাহকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। মাদ্রাসার ছাত্র আটক হওয়ায় এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেন ও প্রতিবাদ জানান।
সম্পত্তিগত বিরোধ ও হাফেজ নেমতুল্লাহ খন্দকারের জায়গায় জোরপূর্বক মনির খন্দকার বসতঘর নির্মাণ করাকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে বাঁধা প্রদান করেন। সেই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মনির খন্দকার তার স্ত্রী ৩৫ বছর বয়সী মালেকা বেগমকে দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে বলে সাজানো মামলা নেমতুল্লাহ খন্দকারের ছোট ছেলে মাদ্রাসার ছাত্রকে ফাঁসিয়ে দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফারুক তদন্তে ঘটনাস্থলে গেলে বাড়ির প্রত্যক্ষদর্শী বেশ কয়েকজন লোক ও স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার সিদ্দিকুর রহমান বেপারীসহ গ্রাম পুলিশরা ধর্ষণের চেষ্টা মামলার ঘটনাটি সাজানো বলে পুলিশের কাছে সাক্ষী দেন।
নেয়ামতুল্লাহ খন্দকারের ছেলে রহমত উল্লাহ জানান, ১৯৮০ সাল থেকে নেয়ামতুল্লাহ খন্দকারের জায়গা নিয়ে মনির খন্দকারের বাবা শহীদুল্লাহ খন্দকার গংদের সাথে বিরোধ চলে আসছে। সম্পত্তির মালিক হাফেজ নেয়ামতুল্লাহ খন্দকার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ইউপি চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু পাটোয়ারী বেশ কয়েকবার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। সবশেষ মনির খন্দকার তার স্ত্রীকে দিয়ে সাজানো একটি ধর্ষণের চেষ্টার মামলা দিয়ে মাদ্রাসা ছাত্রকে ফাঁসিয়ে দেয়। এই হয়রানিমূলক মামলা তীব্র প্রতিবাদ নিন্দা জানাই। আমরা চাই সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানাই।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু পাটোয়ারী জানান, হাফেজ নেয়ামতুল্লাহ খন্দকারের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করলে ইউনিয়ন পরিষদে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এই ঘটনায় সমাধান করার চেষ্টা করলেও প্রতিপক্ষরা না আসায় স্থায়ীভাবে সমাধান হয়নি। মনির খন্দকার তার বাড়ির বেড়াতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে প্রতিপক্ষকে হয়রানি করার চেষ্টা করে।
৯ নভেম্বর, ২০২০।