মতলবে নারায়ণপুর সপ্রাবি’র প্রধান শিক্ষক অসত্য অভিযোগে হয়রানীর শিকার

অভিযোগকারীর দুঃখ প্রকাশ

নিজস্ব সংবাদদাতা
মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছাত্র বলরাম দাসকে পিইসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দেয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার বাবা অর্জুন দাস একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অর্জুন দাস অভিযোগটি চট্টগ্রামস্থ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উপ-পরিচালক বরাবর দায়ের করেন। এ নিয়ে স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদের জের ধরে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।
তবে অভিযোগকারী বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন প্রধান শিক্ষকের কোন ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে আমি এ অভিযোগ দায়ের করিনি। মূলত প্রতিবন্ধী হিসেবে পাস করার কোন সুযোগ আছে কি না তা ছিল আমার উদ্দেশ্য।
অভিযোগ সূত্রে সরেজমিনে জানা যায়, অভিযোগকারীর সন্তান বলরাম দাস ঐ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। তবে ১ম শ্রেণি থেকেই তার লেখাপড়ার অমনোযোগিতার বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। বলরাম দাস সম্পর্কে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরিচালনা কমিটির সদস্যরা তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিদ্যালয় সূত্রে ও অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত কোন পরীক্ষায় সে পাস করেনি। এমনকি প্রশ্নপত্রের সাথে উত্তরপত্রের কোন সামঞ্জস্যও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার অশোভনীয় আচরণে শিক্ষার্থীরা সব সময় আতংকে থাকত বলে একাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা এ প্রতিবেদককে জানান।
এ ব্যাপারে বলরাম দাসের বাবা অর্জুন দাসের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি আমার সন্তানের ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। প্রকৃতপক্ষে আমার সন্তান লেখাপড়ায় অমনোযোগী এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। প্রধান শিক্ষকের কোন ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে আমি এ অভিযোগ দায়ের করিনি। মূলত প্রতিবন্ধী হিসেবে পাস করার কোন সুযোগ আছে কি না তা ছিল আমার উদ্দেশ্য। বিষয়টি এতদূর গড়াবে তা বুঝতে পারিনি। বিষয়টির জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মো. সোহরাব হোসেন জানান, বলরাম দাসকে পড়াশোনায় স্বাভাবিক রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রতিটি পরীক্ষায় সে প্রশ্নের উত্তর না লিখে ইচ্ছেমত আঁকি-বুকি করে খাতা জমা দিয়ে যায়। ফলে তাকে কোনভাবেই প্রমোশন দেয়ার সুযোগ থাকে না।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহিদ খান বাবু এ বিষয়ে জানান, বলরাম দাসের ব্যাপারে তার অভিভাবক কখনোই আমাদের কাছে কোন প্রকার অভিযোগ করেনি। বরং বলরাম দাসের প্রতিটি পরীক্ষার খাতা প্রধান শিক্ষক আমাদের দৃষ্টিগোচর করেছেন। আমরা দেখেছি ঐ খাতাগুলিতে কোন প্রকার নম্বর দেয়ার কোন সুযোগ ছিল না।
তিনি আরো জানান, অভিযোগকারীর সন্তান বলরাম দাস বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় পরীক্ষায় পাস করতে পারে না। আমি মনে করি আমাদের বিদ্যালয়টি উপজেলায় বরাবরই সন্তোষজনক ফলাফল করে আসছে। চলতি পিইসি পরীক্ষায় ৯৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৫ জন ‘এ’ প্লাস পেয়েছে এবং শতভাগ পাস করেছে। কোন একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে অর্জুন দাসকে দিয়ে এ ধরনের অসত্য অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জুলফিকার আলী জনি বলেন, বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে ঘটনাটি খতিয়ে দেখবো।