মতলবে ব্রিজ দিয়ে পারাপার হতে পারে না কেউ

নির্মাণের সাড়ে ৩ বছর পরও

সফিকুল ইসলাম রিংকু
৬৮ লাখ ৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত গার্ডার ব্রিজ দিয়ে গত সাড়ে ৩ বছরেও কেউ চলাচল করতে পারেনি। শুধু দু’পাশের এপ্রোচ সড়ক না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েঠে। এমনই এক চিত্র দেখা গেছে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নিউ হোস্টলের পশ্চিম দিকে খালের উপর নির্মিত একটি ব্রিজের।
জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৬৮ লাখ ৫ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নিউ হোস্টেলের পশ্চিম দিকে খালের উপর একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের দায়িত্ব পায় চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কামাল হোসেন। পরে লটারির মাধ্যমে সোনালী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী গোলাম মোস্তফা ব্রিজের কাজটি করেন।
ব্রিজের কাজ সম্পন্ন হলেও তার দু’দিকে এপ্রোচে মাটির কাজ না করেই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রবিউল আলমকে ম্যানেজ করে কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে জামানতের টাকা তুলে নেন। গত সরকারের প্রভাবশালী নেতা হওয়ার কারণে কেউ এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে সাহস পায়নি। আর সে কারণে গত সাড়ে ৩ বছরেও প্রায় পৌনে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ব্রিজটি দিয়ে পারাপার করতে পারেনি কেউ।
সরেজমিনে আরো জানা যায়, এই চলাচলের রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন কোমলমতি শত-শত শিক্ষার্থী ও হাজার-হাজার এলাকাবাসী চলাচল করে।
বর্তমানে ব্রিজটির পাশ দিয়ে একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে বয়োবৃদ্ধ ও ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা মাঝে-মধ্যে পড়ে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে দ্রুত এপ্রোচ সড়কটি নির্মাণের ব্যবস্থা করবে- এমনটি কামনা করছে এলাকাবাসী।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কামাল হোসেন বলেন, আমার লাইসেন্সে কাজ হলেও বাস্তবে কাজ করছে সোনালী এন্টারপ্রাইজের গোলাম মোস্তফা। কিভাবে এপ্রোচ সড়কের কাজ রেখেই জামানতের টাকা উঠিয়ে নিয়েছে, তা তিনি আর পিআইও জানেন।
গোলাম মোস্তফা বলেন, মাটি ভরাট করে দিয়েছি। মতলব দক্ষিণ উপজেলার সাবেক পিআইও রবিউল আলম বলেন, ব্রিজের দু’পাড়ের এপ্রোচ সড়কের কাজটি পৌরসভার করে দেয়ার কথা ছিল। তারা বালি দিয়েছেন, কিন্তু বর্ষার পানিতে তা সরে গেছে।
বর্তমান প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। ঠিক আছে, একটি প্রকল্প দিয়ে দিচ্ছি। এবার যেন ব্রিজের দু’পাড়ের এপ্রোচ সড়কের কাজ হয়ে যায়, তার ব্যবস্থা করছি।

১১ ডিসেম্বর, ২০২৪।