
মনিরুল ইসলাম মনির
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এমপি বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য হবে এবং বিএনপিও সে নির্বাচনে অংশ নেবে। তিনি গতকাল শনিবার বিকেলে মতলব উত্তর উপজেলার মমরুজকান্দি সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইসলামাবাদ, দুর্গাপুর, বাগানবাড়ি, সুলতানাবাদ, ফতেপুর পূর্ব ও ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারও বিতর্কিত হয়েছে উল্লেখ করে ত্রাণ মন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমরাও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা ও নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। বিএনপিও ‘৯৬ এবং ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচিন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। সর্বশেষ ৫ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এই সরকার বৈধ বলে তিনি জানান।
মন্ত্রী মায়া বলেন, কোনো সহায়ক সরকার নয়, এ সরকারই আগামি নির্বাচনকালীন সময়ে ৩ মাস অন্তবর্তীকালীন সরকার হিসেবে কাজ করবে। তবে তারা কোথাও নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করবে না, নির্বাচন কমিশনই স্বাধীনভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।
বিএনপির দুর্নীতির কাহিনী রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৎ সাহস আছে বলেই তিনি সত্যকে মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন।
মায়া চৌধুরী বলেন, বিএনপির দুর্নীতির বিষয়ে হাটে হাড়ি ভেঙে দিয়েছেন। আর তাই তাদের অন্তর্জ¡ালা শুরু হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়া পরিবারের দুর্নীতি জাতির সামনে তুলে ধরায় বিএনপির অন্তর্জ্বালা শুরু হয়ে গেছে।
ত্রাণ মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়া পরিবারের দুর্নীতির কথা বলেছেন দেশী-বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে। তিনি সংসদের মাধ্যমে জাতিকে তা জানিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, জিয়া পরিবারের দুর্নীতির বিষয়ে দেশী-বিদেশী পত্রিকা এবং টেলিভিশনে সৌদি আরব, কাতার, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় শপিং মল ও রোস্তোঁরাসহ বিভিন্ন খাতে অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিএনপি যে বিনিয়োগ করেছে সে তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশী ও বিদেশী পত্রিকা ও টেলিভিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সংসদের মাধ্যমে দেশের মানুষকে তা জানিয়েছেন। আর তাই বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে।
পদ্মা সেতুর নকশা নিয়ে বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, পদ্মাসেতুর নকশায় ভুল প্রমাণ করতে না পারলে বিএনপি নেতাকে মামলার মুখোমুখী হতে হবে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর ডিজাইনে ভুল রয়েছে বলে মির্জা ফখরুল দাবি করেছেন। আপনি এ বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করুন। তা নাহলে আপনাকে আদালত যেয়ে মামলা মোকাবেলা করতে হবে।
জঙ্গি দমন বিষয়ে মায়া বলেন, জঙ্গি দমনে সক্ষমতার দিক থেকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সমসাময়িক বিশ্বের জন্য রোল মডেল। তারা যেভাবে জঙ্গি দমন করেছে সত্যি দেশের জন্য তা প্রশংসনীয়।
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা জঙ্গিবাদের কাছে পরাজয় স্বীকার করিনি। তাদেরকে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা দমন করেছে। আজকে ঘটনায় তা আবারো প্রমাণ হলো।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য। নতুন কূটনৈতিক মিশন চালু ও কূটনৈতিকদের সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রবাসীদের সংকট সমাধানে বিদেশের কর্মরত কূটনীতিকের ভূমিকা রাখতে হবে।
যুদ্ধাপরাধীরা বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে ত্রাণ মন্ত্রী বলেন, তারা দেশের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক দল শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। তারা দেশের শীতার্ত মানুষের মধ্যে এক কোটি কম্বল বিতরণ করেছেন।
উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এইচএম জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় জনসভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দিপু, বাংলাদেশ আ.লীগ জাতীয় পরিষদ সদস্য একেএম রিয়াজ উদ্দিন মানিক, মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনজুর আহমদ, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি আলহাজ মাইনুল হোসেন খান নিখিল, মন্ত্রীপতœী পারভীন চৌধুরী, মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলা মহিলা লীগের উপদেষ্টা সুবর্ণা চৌধুরী বীনা, উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী গাজী, কবির হোসেন মাস্টার, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহজাহান প্রধান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম সরকার ইমন, ছেংগারচর পৌরসভার মেয়র আলহাজ রফিকুল আলম জর্জ, দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান মো. আবুল খায়ের, ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি মাহবুব হোসেন প্রধান, সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মো. মমিন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোজাম্মেল হক, ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী সালাউদ্দিন, ফতেপুর পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ, ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সরকার আলাউদ্দিন, উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি পারভীন শরীফ, ইসলামাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান সাজেদুল হোসেন বাবু বাতেন, ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন সরকার, সুলতানাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুর মোর্শেদ স্বপন, বাগানবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. নান্নু মিয়া, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি দেওয়ান জহির, সাধারণ সম্পাদক কাজী শরীফ, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মিনহাজ উদ্দিন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক তামজিদ সরকার রিয়াদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য সচিব অ্যাড. আক্তারুজ্জামান ও ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রহমত উল্লাহ সরকার লিখন প্রমুখ।