মতলব উত্তরে করোনা ভ্যাকসিন বিক্রিকারী ইপিআই পোর্টারম্যান বরখাস্ত

স্টাফ রিপোর্টার
মতলব উত্তর উপজেলায় বাড়ি-বাড়ি গিয়ে করোনার টিকা (করোনার ভ্যাকসিন) অর্থের বিনিময়ে বিক্রির মাধ্যমে শরীরে পুশ করার অভিযোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) পোর্টারম্যান (ভ্যাকসিন বাহক) জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন অফিস সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ ঘটনায় মতলব উত্তর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুসরাত জাহান মিথেন বলেন, তদন্ত কমিটি প্রাথমিকভাবে ইপিআই পোর্টার (ভ্যাকসিন বাহক) জাকির টাকার বিনিময়ে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ৩১ পিস সিনোফার্ম করোনার ভ্যাকসিন দিয়েছে, তার প্রমাণ মিলেছে। পোর্টারম্যান জাকিরের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত চিঠি সিভিল সার্জন কার্যালয় ও ডিজি অফিসে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে যদি জাকিরের সঙ্গে আর কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যাওয়ার প্রমাণ মিলে তাহলে তার বিরুদ্ধেও দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ডা. নাইমুল ইসলাম মোনাস বলেন, প্রাথমিকভাবে জাকির হোসেন বিষয়ে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আমাদের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। জাকিরের সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত ১৯ আগস্ট ৩১টি টিকা চুরি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায় জাকিরের বিরুদ্ধে। পরে উপজেলার মরাদন গ্রামে ও ২২ আগস্ট ঠাকুরচর গ্রামে জাকির হোসেন নগদ অর্থের বিনিময়ে বাড়িতে গিয়ে করোনার টিকা পুশ করে বলে এলাকাবাসী জানান। বিষয়টি জানতে পেরে ২২ আগস্ট সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহর নির্দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মাইনুল ইসলাম মোনাসকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মতলব উত্তর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ডা. নাইমুল ইসলাম মোনাস বলেন, প্রাথমিকভাবে জাকিরের বিষয়ে আনীত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আমাদের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্্যাহ বলেন, এত সতর্কতার পরও এমন ঘটনা দুঃখজনক। বিষয়টি জানার পরই আমি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেই। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ২৬ আগস্ট অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। থানায় জিডি করা হয়েছে। এছাড়া টিকাদান কেন্দ্রের নিরাপত্তা বাড়াতে পুলিশ বিভাগের সাথে কথা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে আগামীকাল মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আমার কাছে জমা দেবে। তদন্ত রিপোর্ট আসলে পুরো বিষয়টি ক্লিয়ার হওয়া যাবে।
তিনি জানান, জাকির টিকাগুলো বহন করতেন। এটি ছিল তার দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে কাজ। সবার অগোচরে তিনি কিছু টিকার ডোজ সরিয়ে একটি বাড়িতে গিয়ে টিকাগুলো দেন। আমরা জানতে পেরে তাকে বরখাস্ত করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মতে তার বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যেই ওই ব্যক্তি বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আমরা তার বিরুদ্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পাওয়া গেলে মামলা করা হবে।
৩১ আগস্ট, ২০২১।