
মতলব উত্তর ব্যুরো
মতলব উত্তর থানা পুলিশের দুঃসাহসিক অভিযানে দু’মাস আগে সংঘটিত লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। ডাকাত দলনেতা রাসেল গ্রেপ্তার এবং ১৬৪ ধারায় আদালতে দোষ স্বীকার করে নেয়ার তাকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
ওরা ১১ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল। ইয়াবা কারবারের পাশাপাশি জুয়া খেলা ছিল তাদের নেশা। জুয়ায় হারলে পাগলপ্রায় হয়ে উঠতো। তখন নগদ নারায়নের জন্য কখনো বাড়িতে, আবার কখনো সড়কে ডাকাতি করে মানুষের সর্বস্ব লুটে নিত। মতলব উত্তর থানার শীর্ষ তালিকাভূক্ত মাদক স¤্রাট রাসেল (২৮) এর পুলিশের কাছে ও আদালতে ১৬৪ ধারায় প্রদত্ত দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ রকম চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। সে গালিমখাঁ গ্রামের হামিদ আলীর ছেলে। সেই সাথে ৬৩ দিন আগে সংঘটিত একটি দুর্ধর্ষ রোড ডাকাতি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয় মতলব উত্তর থানা পুলিশ।
গত ১৭ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে ১১ জনের এই সংঘবদ্ধ ডাকাত দল কুখ্যাত মাদক ও স¤্রাট রাসেলের নেতৃত্বে মতলব উত্তর থানাধীন হরিণা-ঘাসিরচর সড়কে রাস্তায় গাছ ফেলে মাইক্রো আটকিয়ে দুঃসাহসিক এ ডাকাতির ঘটনাটি সংঘটন করে।
মামলার সংঘটিত ডাকাতি ঘটনাটির তদন্তকালে অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মুরশেদুল আলম ভূঁঞা, সেকেন্ড অফিসার এসআই ইসমাইল হোসেন, এসআই ফিরোজ আলম, তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গোলাম মোস্তফা, এএসআই হাবিব, এএসআই মোস্তফা, এএসআই নাহিদ, এএসআই হানিফ ও অন্যান্য অফিসার ফোর্সের সমন্বয়ে গঠিত টিম মতলব উত্তর থানা পুলিশ প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ঘটনার সমসময় ও ঘটনাস্থল নিয়ে কাজ করে স্থানীয় একটি ডাকাত গ্রুপকে উক্ত ডাকাতির ঘটনায় জড়িত মর্মে শনাক্ত করে এবং এ গ্রুপটির দলনেতা কুখ্যাত মাদক ও ডাকাত স¤্রাট ১১ মামলার আসামি রাসেল (২৮), পিতা হামিদ আলী, সাং গালিম খাঁ কে গত ২০ মার্চ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে গালিমখাঁ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
আটক রাসেল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার নেতৃত্বে ১১ জনের ডাকাত দল কর্তৃক রাস্তায় গাছ ফেলে এ ডাকাতির ঘটনা সংঘটনের কথা স্বীকার করলে ২১ মার্চ তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কার্তিক চন্দ্র ঘোষের আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষস্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে আসামি। জবানবন্দি শেষে ডাকাত রাসেলকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। এ মামলায় আরো তিন ডাকাতকে ইতোপূর্বে আটক করে মতলব উত্তর থানা পুলিশ।
কুখ্যাত এ ডাকাত ও মাদক স¤্রাট রাসেলের বিরুদ্ধে (১) মতলব উত্তর থানার এফআইআর নং-৮/৫৮, তারিখ-৯ মার্চ, ২০১৯; সময় ৬.৩০ ঘটিকা ধারা-৩৬(১) এর ১০(ক)/৪১ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮। (২) মতলব উত্তর থানার এফআইআর নং-১৩/১৫৭, তারিখ- ১৮ সেপ্টে, ২০১৮; জি আর নং-১৫৭, তারিখ- ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮; সময়- ০৭.৩৫ ঘটিকায়। ধারা- ১৯(১) এর ৯(ক)/২৫ ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন। (৩) মতলব উত্তর থানার এফআইআর নং-৭, তারিখ-১৬ এপ্রিল, ২০১৮; জি আর নং-৪৯, তারিখ- ১৬ এপ্রিল, ২০১৮; সময়-৭.৫০ ধারা-১৯(১) এর ৯(খ)/২৫ ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন। (৪) মতলব উত্তর থানার এফআইআর নং-২, তারিখ- ৭ মার্চ, ২০১৮; জি আর নং-৩৩, তারিখ-৭ মার্চ, ২০১৮; সময়-২২.৩৫ ধারা-১৯(১) এর ৯(ক)/২৫ ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন। (৫) মতলব উত্তর থানার এফআইআর নং-১, তারিখ-২ জানু, ২০১৮; জি আর নং-১, তারিখ- ২ জানু, ২০১৮; সময়- ০৬.১০ ঘটিকায়। ধারা-৩৯৯/৪০২ পেনাল কোড-১৮৬০। (৬) মতলব উত্তর থানার এফআইআর নং-০৯, তারিখ-২৭ জুলাই, ২০১৬; জি আর নং-৯৭, তারিখ-২৭ জুলাই, ২০১৬; সময়- ১৭.১৫ ঘটিকায়। ধারা-৩৮০/৪১১। (৭) মতলব উত্তর থানার এফআইআর নং-১৩, তারিখ-২৭ জুন, ২০১৬; জি আর নং-৮৯, তারিখ-২৭ জুন, ২০১৬; সময়-১৩.১৫ ঘটিকায়। ধারা-১৯(১) এর ৯(খ)/২৫ ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন। (৮) মতলব উত্তর থানার এফআইআর নং-১০, তারিখ-১০ মার্চ, ২০১৬; জি আর নং-৩৯, তারিখ- ১০ মার্চ, ২০১৬; সময়-০৮.৪৫ ঘটিকায়। ধারা-১৯(১) এর ৯(ক)/২৫ ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন। (৯) মতলব উত্তর থানার এফআইআর নং-১৯, তারিখ- ২৯ অক্টো, ২০১৫; জি আর নং-১৯৫, তারিখ-২৯ অক্টো, ২০১৫; সময়-০১.১৫ ঘটিকায়। ধারা-১৯(১) এর ৯(ক)/২৫ ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন। (১০) মতলব উত্তর থানার এফআইআর নং-২, তারিখ- ০৪ ফেব্রু, ২০১৮; জি আর নং-১৯, তারিখ- ০৪ ফেব্রু, ২০১৮; সময়-১৪.৩০ ধারা-১৯(১) এর ৯(ক)/২৫ ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন। ও (১১) মতলব উত্তর থানার এফআইআর নং-১৩, তারিখ- ১৮ মে, ২০১৫; জি আর নং-৮০, তারিখ- ১৮ মে, ২০১৫; সময়- ধারা-১৯(১) এর ৯(খ)/২৫ ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন আদালতে বিচারাধীন আছে।
পলাতক সহযোগীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।