মতলব পৌরবাসী সেবা না পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে


মাহ্ফুজ মল্লিক
সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা ও পেনশনের দাবিতে মতলব দক্ষিণ উপজেলার মতলব পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত ১৪ জুলাই থেকে ঢাকায় লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এতে পৌরসভাটির সামগ্রিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা চলছে। ময়লা-আবর্জনায় ছেয়ে গেছে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা। দুর্ভোগ পোহাচ্ছে স্থানীয় লোকজন।
গতকাল বুধবার দুপুর ১টায় মতলব পৌরসভার কার্যালয়ে দেখা যায়, সেখানকার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কক্ষগুলো বন্ধ। মেয়রের কক্ষটি খোলা থাকলেও সেখানে কেউ নেই। পৌরসভা কার্যালয়ে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি চোখে পড়েনি। ওই কার্যালয়ের চত্বরে কিছু লোকের জটলা দেখা যায়। ওই জটলার একজন পৌরসভার নবকলস এলাকার বাসিন্দা।
নাম প্রকাশ না করে তিনি বললেন, তার ছেলের জন্মনিবন্ধন সনদপত্র ও নিজের জন্য নাগরিকত্বের সনদপত্রের জন্য গত কয়েকদিন ধরে এখানে এসে কাউকে পাচ্ছেন না। এতে চরম ভোগান্তিতে আছেন তিনি। জরুরি প্রয়োজনে এসব সনদ না পাওয়ায় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা না থাকলে একটি পৌরসভার কাজ কীভাবে চলে?
মতলব পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. নুরুজ্জামান মিয়া মুঠোফোনে বলেন, সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা ও পেনশনের দাবিতে তারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। গত ১৪ জুলাই থেকে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের দাবিগুলো খুবই যুক্তিযুক্ত। এসব দাবি মেনে নেয়া না হলে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
মতলব পৌরসভার কলাদী, দক্ষিণ ও মধ্য কলাদী, ঘোষপট্টি, সিঙ্গাপুর প্লাজা, হাসপাতাল রোড, নবকলস, চরমুকুন্দি, দশপাড়া ও টিঅ্যান্ডটিসহ আরও কয়েকটি এলাকার অন্তত ২০-২৫ জন বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাদের এলাকায় বাড়ির সামনে ও সড়কে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ হয়ে আছে। এসব স্থানে মশা, মাছি ও অন্যান্য কীটপতঙ্গের উপদ্রব বেড়ে গেছে। দুর্গন্ধে তাদের এলাকাসহ পৌর এলাকার প্রায় সব এলাকার লোকজন নাকাল। পৌরসভার কর্মচারীরা আন্দোলনে থাকায় এসব পরিস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। শহরের লোকেরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন জ্বর, ডেঙ্গুজ্বর, ব্রংকাইটিস ও ডায়রিয়াসহ নানা রোগে। এসব সমস্যা জানানোর মত লোকও নেই পৌরসভায়।
তাদের অভিযোগ, নিজেদের স্বার্থে আন্দোলন করছেন পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জনগণের সমস্যা ও স্বার্থের কথা তাদের মাথায় নেই। এটি খুবই দুঃখজনক।
হজ করতে যাওয়ায় মতলব পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেনের সঙ্গে এসব সমস্যা নিয়ে কথা বলা যায়নি। পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবুল বাশার পারভেজ বলেন, পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে দাপ্তরিক ও সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মানুষ ভোগান্তির মধ্যে আছেন। এর মধ্যেও তার নিজ উদ্যোগে সুপেয় পানি সরবরাহ ও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

১ আগস্ট, ২০১৯।