স্টাফ রিপোর্টার
অবশেষে মারা গেলেন ক্যান্সার আক্রান্ত চাঁদপুর সদর উপজেলার পশ্চিম তরপুরচন্ডী কাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফেরদৌসী ইয়াসমীন। ৮ মাস ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করে সোমবার (৫ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি…….রাজিউন)। গতকাল বাদআছর চাঁদপুর সদর উপজেলার পশ্চিম তরপুরচন্ডী কাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রথম জানাযা ও বাদএশা কচুয়ায় দ্বিতীয় জানাযা শেষে স্বামীর কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়।
জানা যায়, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ফেরদৌসী ইয়াসমীনের ফুসফুসে ক্যান্সার সনাক্ত হয়। অক্টোবর মাসে বিদ্যালয় থেকে ছুটি নিয়ে শুরু হয় তার চিকিৎসা। কিন্তু স্বামীহারা, ৩ মেয়ের জননী ফেরদৌসীর বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় তার চিকিৎসাও ঠিকভাবে করা যায়নি। প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষক সমিতিও তাকে তেমন সহযোগিতা করেনি। তবে তার বিদ্যালয় ক্লাস্টারের শিক্ষকরা মাত্র ২০ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে সহযোগিতা করেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলার পশ্চিম তরপুরচন্ডী কাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফেরদৌসী ইয়াসমীন। শিক্ষকতার মহান পেশায় নিয়োজিত হন ১৯৮৭ সালে। স্থানীয় শিক্ষার্থীদের শিক্ষার আলোয় গড়ে তুলতে বেসরকারি রেজিস্ট্রার বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। স্বপ্ন দেখতেন নিজের স্বচ্ছলতা না ফিরলেও শিক্ষার আলো নিয়ে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা আলোকিত মানুষ হবে। স্বচ্ছল হবে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের জীবন।
ইতোমধ্যে ২০১৩ সালে জাতীয়করণ শিক্ষক হিসেবে অর্ন্তভুক্ত হন শিক্ষক ফেরদৌসী ইয়াসমীন। পারিবারিক কিছুটা স্বচ্ছলতা আসে। কিন্তু সে সুখ আর কপালে জুটলো না। পরিবারের সবাইকে কাঁদিয়ে তার স্বামী গত বছর চিরবিদায় নেন।
স্বামীকে হারানোর পর জীবনযুদ্ধে তিনি ৩ কন্যাকে নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু বাঁধ সাধে মরণব্যাধী ঘাতক ক্যান্সার। ইতোমধ্যে ধরা পরে ফুসফুসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন ফেরদৌসী ইয়াসমীন। এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত, তার জন্য।
শিক্ষক ফেরদৌসী ইয়াসমীনের ৩ মেয়ে। সাবাই পড়াশুনা করছেন। বড় মেয়ে বর্তমানে অনার্স ফাইনাল বর্ষে অধ্যায়নরত। দ্বিতীয় মেয়ে ডিগ্রি ও ছোট মেয়ে স্থানীয় বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে।
০৬ জুন, ২০২৩।