নোমান হোসেন আখন্দ
শাহরাস্তির পঞ্চনগর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রের ছোড়া ঢিলের আঘাতে ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে। আহত শিক্ষার্থী বর্তমানে কুমিল্লা মুন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্রের পরিবারের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আহত ছাত্রীর পরিবার জানায়, গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের পঞ্চনগর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ১০ম শ্রেণির ছাত্র ও কাদরা গ্রামের প্রবাসী নুরুল হকের ছেলে আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শিহাবের বিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে সিমেন্ট ও বালি দিয়ে তৈরি (বল্ক) ঢিল ছোড়ে। এতে পার্শ্ববর্তী ক্লাসকক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ইশরাত জাহান আঁখি গুরুতর আহত হয়। আঁখি দাঁত, মুখ, নাক ও চোয়ালে গুরুতর জখম হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় অচেতন অবস্থায় তাকে কুমিল্লা মুন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে গত শনিবার বিকাল ৫টায় পঞ্চনগর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে চিতোষী পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউছুফ পাটোয়ারী, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম ও সহকারী প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে এক বৈঠক বসে। বৈঠকে উপস্থিত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ১০ম শ্রেণির ছাত্র শিহাব দোষী প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষার্থীর চিকিৎসা ব্যয় হিসেবে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানায়, শিহাব এর আগেও মনোহরগঞ্জ উপজেলার শাহশরীফ উচ্চ বিদ্যালয় ও খেড়িহর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে শৃংখলা ভঙ্গ, অনিয়ম, ইভটিজিং ও বিশঙ্খলার দায়ে বিদ্যালয় থেকে টিসি দিয়ে বিদায় করা হয়।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন জানান, এ বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই শিহাব শিক্ষার্থীদের মারধর, বিশঙ্খলা ও ছাত্রীদের ইভটিজিং করে আসছে। গত মাসে বিদ্যালয়ের মানববন্ধনের একটি অনুষ্ঠানে সে ৩ ছাত্রীকে ল্যাং মেরে ফেলে দেয় ও অশ্লীল ভাষায় কথা বলে। আমরা তাকে এ বিদ্যালয় থেকে টিসি দিয়ে বিদায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তার অভিভাবকের অনুরোধে তাকে এখনো রাখা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম জানান, শিক্ষার্থী শিহাবের আগের ঘটনাগুলো এ এলাকার লোকজন জানেন। আমরা তাকে টিসি দিয়ে বিদায়ের সিদ্ধান্ত নিলেও শিহাব এসএসসি পরীক্ষার্থী হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তবে সে বিদ্যালয়ে কোন ক্লাস করতে পারবে না। শুধু টেস্ট পরীক্ষা দিবে, কোচিং করবে, এসএসসি পরীক্ষা দিবে। তবে আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার জন্য তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯।