২ ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা
নোমান হোসেন আখন্দ
শাহরাস্তি পপুলার হাসপাতালের ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
প্রসূতির স্বজন ও থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকার ১০নং ওয়ার্ডের সেনগাঁও টুকুর বাপের বাড়ির আবদুল বারেকের ছেলে মো. হোসেনের স্ত্রী ১ সন্তানের জননী জান্নাতুল ফেরদৌসের (২৫) প্রসব ব্যাথা নিয়ে গত ৩১ মে সন্ধ্যা ৬টায় পৌরসভার ঠাকুরবাজার পপুলার হাসপাতালে ভর্তি হয়। ওই দিন রাত ১২ টায় সিজার অপারেশনের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় ফেরদৌস। পরবর্তীতে প্রসূতির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে কর্তব্যরত ডাক্তার রাত ১টায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ভোর ৪ টায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হলে ১ জুন বিকেল সাড়ে ৪টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে ঠাকুরবাজারে এসে হাসপাতাল ভাঙচুর করতে উদ্যত হয় ও মৃত্যুর বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। খবর পেয়ে শাহরাস্তি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম¥দ শাহআলমের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি শান্ত করেন ও থানায় নিয়মিত মামলার আশ^াস দেন।
নিহতের স্বামী মো. হোসেন জানান, আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হলে আমি তাকে পপুলার হাসপাতালে নিয়ে আসি এবং ডা. আরিফুল ইসলাম ও ডা. নাজমুন নাহার মিতু সিজার অপারেশন করান। এতে একটি কণ্যা সন্তান জন্ম নেয়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে ডা. আরিফুল ইসলাম ও ডা. নাজমুন নাহার মিতু আমাকে ডেকে বলেন ফেরদৌসের জরায়ু অপারেশান করতে হবে। নাহয় তার রক্তক্ষরণ বন্ধ হবে না। আমি অপারগ হয়ে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করি। তারা জরায়ু অপারেশান করান। আমি মুর্খ মানুষ, এতো কিছু বুঝি না। তারা আমার স্ত্রীকে ভুল চিকিৎসায় হত্যা করেছে। এ ব্যাপারে তিনি আইনের সহয়োগিতা কামনা করেন।
ডা. আরিফুল ইসলাম জানান, রোগী আসার পর প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষায় রোগীর ‘প্লাসেন্টা প্রিভিয়া’ রোগ ধরা পড়ে। তখন তার অভিভাবকদের জানালে তারা অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে সিজার করার অনুমতি প্রদান করে। সফল অপারেশনের পর তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রোগীর অভিভাবকদের জানালে তারা রক্তের ব্যবস্থা করেন। এক পর্যায়ে রোগীর অবস্থা খারাপ হলে তাদের সাথে পরামর্শ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি।
তিনি আরো জানান, রোগীর প্রসব ব্যাথা শুরু হলে তারা হোম ট্রায়াল করেছেন, যে কারণে রোগীর প্লাসেন্টা প্রিভিয়া রোগটি বেড়ে যায় এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বেড়ে যায়। রোগী তার প্রথম সন্তান প্রসবকালে বড় সিজার গ্রহণ করেছিলেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম¥দ শাহআলম জানান, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং উত্তেজিত জনতাকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। এ বিষয়ে ২ ডাক্তার কে বিবাদী করে নিয়মিত মামলা হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জানান, এ হাসপাতালে এমন ঘটনা আরো ঘটেছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর যেন না হয়, সেজন্য আইনের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন।