শিক্ষক সংকট ও শ্রেণিকক্ষের অভাবে মতলব উত্তরের সরদারকান্দি সপ্রাবিতে পাঠদান ব্যাহত

মতলব উত্তর ব্যুরো
শিক্ষক স্বল্পতা, নেই শ্রেণিকক্ষ ও বসার বেঞ্চ রয়েছে টয়লেটের অভাব। এতসব সীমাবদ্ধতা ও শিক্ষার প্রতিকূল পরিবেশ সত্ত্বেও সাফল্যেও দিক থেকে পিছিয়ে নেই মতলব উত্তর উপজেলার প্রায় শতবর্ষী ১০১নং সরদারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় পার করছে টানা পাঁচ বছর।
বিদ্যালয়ের বেহাল অবস্থা দেখে অনেক অভিভাবকই তাদের শিশু সন্তানদের বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি করছে। যে কারণে সরকারের বাধ্যতামূলক সরকারি প্রাথমিক শিক্ষার সুফল থেকে অনেক শিশু বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নে ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত সরদারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রায় ২শ’ শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য রয়েছেন মাত্র ৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। এদের মধ্যে (সিআইএনইডি) প্রশিক্ষণে রয়েছে ১ জন শিক্ষিকা। এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর শিক্ষক স্বল্পতা, শ্রেণিকক্ষ ও বসার বেঞ্চ স্বল্পতাসহ প্রয়োজনের তুলনায় টয়লেটেরও অভাব রয়েছে। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের পর ১৯৯৪-৯৫ সালে ১টি ভবন নির্মাণ করা হয়।
যে ভবনটি ২০১৬ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ২০১৮ সালে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভেঙে ফেলা হয়। ২০০৬-০৭ সালে আশ্রয়ন প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। যেখানে চলছে বর্তমান পাঠদান। ছাত্র-ছাত্রীর সংকুলান না হওয়ায় পাঠদান চলে আশ্রয়ন প্রকল্পের বরান্দায় চতুর্দিকে টিন দিয়ে নির্মাণ করা হয় শ্রেণিকক্ষ। প্রচ- গরমের মধ্যে ক্লাস করছে, বিদ্যুৎ থাকলেও বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নেই কোন বৈদ্যুতিক পাখা। এই জরাজীর্ণ টিনের ঘরে গাদাগাদি করে বসিয়ে চলে পাঠদান। তাছাড়া প্রয়োজনের তুলনায় টয়লের স্বল্পতা থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে খোলা জায়গায় ও আশপাশের বাসা বাড়িতে যেতে বাধ্য হয় বলে জানা গেছে।
এসব সমস্যার মধ্যেও অভিভাবকদের সহযোগী মনোভাব শিক্ষক-শিক্ষিকার প্রচেষ্টায় ফলাফলে সাফ্যল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে বিদ্যালয়টি। গত পাঁচ বছর ধরে শতভাগ পাসসহ জিপিএ-৫ ও রয়েছে সন্তোষজনক।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বল্পতা, শ্রেণিকক্ষ নেই ভাল স্যানিটেশন ব্যবস্থা। বিদ্যালয়ের বেহাল অবস্থা দেখে অনেক অভিভাবকই তাদের শিশু সন্তানদের বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি করছে। যে কারণে সরকারের বাধ্যতামূলক সরকারি প্রাথমিক শিক্ষার সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি হলে সবার সহযোগিতা নিয়ে সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
মতলব উত্তর উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া শিক্ষক স্বল্পতা, শ্রেণি কক্ষের অভাবসহ সমস্যার কথা স্বীকার করেন। এবং শিক্ষক সংকট সমাধানেও দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

৪ জুলাই, ২০১৯।