শেকড়ের টানে আপন ঠিকানায় ছুটছে ঘরমুখো মানুষ


এস এম সোহেল
বছর ঘুরে আবার এসেছে ঈদ। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদ উল ফিতর মুসলিম জনগোষ্ঠির মাঝে আনন্দের বন্যা বইয়ে দিয়ে যায়। প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ফিরে যেতে মানুষ যত রকমের ঝুঁকি আছে সবই নিতে প্রস্তুত। বাস, ট্রেন, লঞ্চে করে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ ছুটছে শেকড়ের টানে। পদে পদে ভোগান্তি, অসহনীয় যানজট, মারাত্মক পরিবহন সংকট, যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, হয়রানি, মালামাল নিয়ে কুলিদের টানাটানি, বাস শ্রমিকদের টানাহেঁচড়া, পকেটমার ও মলমপার্টির দৌরাত্ম্য এমনি নানা ভোগান্তিতে নাকাল মানুষ তবু সব উপেক্ষা করে ছুটছে শেকড়ের টানে, বাড়ির পানে। দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত মানুষরা নিজেদের পরিবারের সাথে ঈদ করতে ছুটে যাচ্ছেন নিজেদের পরিবারের কাছে। কর্মব্যস্ত নগরী, ক্লান্তিকর জীবন থেকে কিছু দিনের জন্য প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটাতে চিরচেনা নিজ নিজ বাড়িতে ছুটে আসছে মানুষ।
সরজমিনে গিয়ে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায়, শুক্রবার থেকেই মানুষ বাড়ি-ঘরে আসতে শুরু করেছে। গতকাল রোববার নারীর টানে মানুষ চাঁদপুরের নদীপথ, রেলপথ ও সড়ক পথে যানবাহনে ভিড় শুরু হয়ে গেছে। ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষ শত কষ্ট ও দুর্ভোগ শিকার করে বাড়ি-ঘরে ফিরলেও ঈদ আপনজনদের সাথে করতে পারার আনন্দে সব ভুলে যান।
লঞ্চ মালিক প্রতিনিধি মো. রুহুল আমিন হাওলাদার জানান, এ বছর ঈদের ৫/৬ দিন আগের লম্বা ছুটি পাওয়ায় মানুষ স্ব-স্ব গন্তব্যে পৌঁছতে শুরু করেছে। তবে এখনো লঞ্চে যাত্রীদের ভিড় তেমন হয়নি। আশা করছি আজ সোমবার থেকে যাত্রীদের ভিড় হবে।
চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী পরিচালক শহীদুল ইসলাম জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সব প্রস্তুতি রয়েছে। যাত্রীদের ভিড় সামাল দিলে পর্যাপ্ত লঞ্চ রয়েছে। চাঁদপুর রুটে ২৩টি লঞ্চ চলাচল করে। আশা করি এবছর যাত্রীরা নিরাপদে ও নির্বিঘেœ আপনজনদের সাথে ঈদের আনন্দ উদ্যাপন করতে পারবে।
নৌ-ফায়ার সার্ভিস টিমের লিডার মো. মোসলেম মিয়াজী জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌ পথে যাত্রীদের নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, নৌ-ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড ও স্কাউটস্ কাজ করে যাচ্ছে। যে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বদা প্রস্তুত। আমাদের নৌ-ফায়ার সার্ভিসের ৩ সিপ্টে লঞ্চঘাটে অবস্থান করছি।
চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনাল ঘাটকে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা যাতে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে লঞ্চে না চরে সেজন্য আমরা বিআইডাব্লিউটি’র পক্ষ থেকে অতিরিক্ত লঞ্চ রিজার্ভ রেখেছি। এছাড়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।