হাইমচর ব্যুরো
হাইমচরে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি আহসান হাবীবকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। একই কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র মিরাজ হোসেন ও তার সাথে থাকা কয়েকজন মিলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এতে হাবীবের শরীরের ৩টি কোপের আঘাতপ্রাপ্ত হয়। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল পৌনে ১০টায় হাইমচর সরকারি কলেজের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত হাবীব দক্ষিণ আলগী গ্রামের আবু পাটওয়ারীর ছেলে আহসান হাবীব। সে হাইমচর সরকারি কলেজের ডিগ্রি ৩য় বর্ষের ছাত্র।
আহতের পরিবারের অভিযোগ বিএনপি নেতা সরদার জলিল মাস্টারের ভাগিনা মিরাজ হোসেনের নেতৃত্বে এ হামলা করা হয়। হামলার ঘটনায় নুরমিয়া আখনের ছেলে সিয়াম হোসেনকে আটক করেছে হাইমচর থানা পুলিশ।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, আলমাস উদ্দিন আখনের ছেলে মিরাজের সাথে আহসান হাবীবের আগের বিরোধ ছিল। আহসান হাবীবের নেতৃত্ব মেনে নিতে পারেনি মিরাজ। কলেজের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তাদের দু’জনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হতো প্রায় সময়। গত সোমবার কলেজের ফি নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি হয়। ঐ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্বপরিকল্পিতভাবে কলেজে ধারালো অস্ত্র নিয়ে কলেজে আসেন মিরাজ। কলেজ গেটের সামনে দুজনের মধ্যে পুনরায় ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে মিরাজ হাবীবকে কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের উপর হামলার মামলায় নিজস্ব লোকদের নাম কেটে অন্য লোকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার বিষয় নিয়েও হাবীবের সাথে মিরাজের শত্রুতার রেশ বাড়তে থাকে।
আহত হাবীবের মামা দুলাল পাটওয়ারী জানান, আহসান হাবীব হাইমচর কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আন্দোলন করেন। আন্দোলনে হাবিব গুরুতরভাবে আহত হয়। পরবর্তীতে নিজে বাদী হয়ে হাইমচর থানায় মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলা করার পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান সরদার আব্দুল জলিল মাস্টার তাকে মামলা তুলে নেয়ার জন্যও হুমকি দেন। তার কথা না শুনার কারণে তিনি তার ভাগিনা মিরাজকে দিয়ে কয়েকবার তার উপর হামলা করান। শেষ পর্যন্ত হাবিবকে হত্যা করার জন্য পরিকল্পনা করে কুপিয়ে জখম করে। আহসান হাবীব বর্তমানে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। হামলার সাথে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
হাইমচর সরকারি কলেজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. কামরুল ইসলাম জানান, হাইমচর কলেজের সামনে আজ যে ঘটনাটি ঘটে গেল তা অনাকাক্সিক্ষত ছিল। আমাদের কলেজে কখনো এমন জঘণ্যতম হামলার ঘটনা ঘটেনি। আহত আহসান হাবীব ও হামলাকারী মিরাজ দু’জনই এ কলেজের ছাত্র। আহসান হাবীবের উপর হামলার ঘটনায় আমরা আলমাস উদ্দিন আখনের ছেলে সিরাজুল ইসলাম মিরাজকে প্রাথমিকভাবে অপরাধের সাথে জড়িত থাকায় কলেজ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছি। ঘটনাটি তদন্তের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তীতে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে।
তিনি জানান, মিরাজ নামক এ ছেলেটি একাদশ শ্রেণির ১ম বর্ষের ছাত্র। সে ইতোপূর্বে কলেজে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ করেন। তার কাছ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ অঙ্গিকারনামাও রাখে।
হাইমচর থানা অফিসার ইনচার্জ মহিউদ্দিন সুমন জানান, শিক্ষার্থী আহসান হাবীবের উপর হামলার ঘটনায় সিয়াম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত রয়েছে তাদের আটক করার চেষ্টা চলছে।
০৬ নভেম্বর, ২০২৪।