গণঅভ্যুত্থানের আহত সার্টিফিকেট ব্যবহার করে হয়রানী
স্টাফ রিপোর্টার
গণঅভ্যুত্থানের আহতের সার্টিফিকেট ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে হাইমচর উপজেলার উত্তর আলগী ইউনিয়নের ছৈয়াল মোড় এলাকার আবির হোসেন শরীফ নামক এক যুবকের বিরুদ্ধে। প্রাইমারি স্কুলের গন্ডি না পেরোলেও সমন্বয়ক পরিচয়ে ‘চাঁদাবাজি’ টাকা না পেলে সাধারণ মানুষকে হয়রানী করার মত ঘটনা প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন এ সমন্বয়ক পরিচয় দেয়া শরীফ। ছৈয়াল মোড় এলাকার মহিবুল্লাহ হাওলাদারের কাছে তার দাবিকৃত টাকা না পেয়ে গত শুক্রবার তার ৯টি দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় এলাকার লোকজন প্রতিবাদ করলে নিজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নিজে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে এলাকাবাসীকে ফাঁসানোর চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে সমন্বয়ক পরিচয়দানকারী এ যুবক।
সরেজিমনে গিয়ে জানা যায়, ছৈয়াল মোড় এলাকার চোরা হানিফ নামে পরিচিত হানিফ মিজির ছেলে আবীর হোসেন শরীফ। ৫ আগস্টের আগে ঢাকায় হকারী করা ছিল তার পেশা। গণঅভ্যুত্থানে নিজেকে আহত দেখিয়ে ছাত্র সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলমের সাথে তোলা একাদিক ছবি দিয়ে নিজেকে ঢাকার কেন্দ্রিয় সমন্বয়ক দাবি করে আসছেন তিনি। এই সমন্বয়ক পরিচয়ে নিজ গ্রাম উত্তর আলগী ইউনিয়নের ছৈয়াল মোড় এলাকার সাধারণ মানুষজনকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা শুরু করে। এলাকার যুবকরা তাকে তার দাবিকৃত টাকা না দিলে তাদের পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে এলাকায় নিজেকে একজন প্রশাসনের উচ্চতর লোকের কাছের লোক বানিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পুরুষ ও নারী জানান, এই শরীফের অত্যাচারে এ এলাকার মানুষজন জিম্মি হয়ে রয়েছে। সে নিজেকে পুলিশ সুপারের কাছের লোক পরিচয় দেন। কখনো নিজেকে ঢাকার বড় সমন্বয়ক পরিচয় দেন। এ পরিচয়গুলো ব্যবহার করে যখন যা মন চায় তখন সে তাই করে। মহিবুল্লাহ হাওলাদার নারায়নগঞ্জের একজন ঠিকাদার, শরীফের দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে নিয়ে যায়। তারপরও সে টাকা না পাওয়ায় তাদের দোকানে তালা মারেন। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য লোকদের সহযোগিতায় দোকানের তালা খুলে দেয়। পরবর্তীতে আবারো সে ১ লাখ টাকা দাবি করেন মহিবুল্লাহ হাওলাদারের শ^শুর বশির ঢালীর কাছে। তার দাবিকৃত টাকা না পেয়ে গত শুক্রবার আবারও দোকানের ভাড়াটিয়াদের বের করে দিয়ে দোকানে তালা মারেন। এলাকার লোকজন বাঁধা দিলে সে তার মোটরসাইকেলটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে থানায় গিয়ে আবারও লোকজনকে হয়রানি করার জন্য ষড়যন্ত্র করেন। তার কথায় কথায় পুলিশ এসে লোকজনকে ধরে নিয়ে যায় বলেই লোকজন ভয়ে তাকে টাকা দিতে বাধ্য হয়। এলাকাবাসী তার এই অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয় বশির উল্লাহ ঢালী জানান, তার জামাই মহিবুল্লাহকে শরীফ নামক সমন্বয়ক পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে টাকার জন্য আমাকে চাপ দেন। আমার কাছে সে ১ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিলে সে আর কোন ঝামেলা করবে না বলে আমাকে জানায়। তাকে টাকা না দেয়ার কারনে সে আজ আমার জামাইয়ের দোকানগুলোতে তালা দিয়ে আটকে দেয়। এখন আবার শুনেছি সে তার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে আমাদের মামলা দিয়ে হয়রানী করার চেষ্টা করছে। আমরা এই অত্যাচারীর হাত থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
১৮ মে, ২০২৫।