মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে সরকারি নিবন্ধন (লাইসেন্স) না থাকায় ৬টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও সিলগালা করেছে উপজেলা প্রশাসন। সরকারি নিবন্ধন (লাইসেন্স) না থাকায় এবং অবৈধভাবে পরিচালিত হওয়ায় সোমবার (৩০ মে) বিকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম অনুমোদনহীন এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও সিলগালা করেন।
এদিন বিকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও থানা পুলিশের সহযোগিতার উপজেলা প্রশাসন এ অভিযান পরিচালনা করে। দেশের অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ করার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনার আলোকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ৩টি চক্ষু হাসপাতাল, ১টি ডেন্টাল চিকিৎসা কেন্দ্র, ১টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ১ টি হাসপাতাল বন্ধ ও সিলগালা করা হয়।
বন্ধ ও সিলগালাকৃত হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো হলো- হাজীগঞ্জ বাজারস্থ আলা চক্ষু হাসপাতাল, হাজীগঞ্জ চক্ষু হাসপাতাল, এ-মিশন ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার, হাজীগঞ্জ মুন হাসপাতাল এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মা ডেন্টাল কেয়ার ও আলীগঞ্জ বাজারস্থ আলীগঞ্জ চক্ষু হাসপাতাল।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ওমর ফারুক, উপজেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) মো. সামছুল ইসলাম রমিজ, হাজীগঞ্জ থানার এসআই প্রভাকরসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনার আলোকে এ দিন বিকালে হাজীগঞ্জ বাজার ও আলীগঞ্জ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম। এ সময় বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে না পারায় হাজীগঞ্জ বাজারস্থ ৩টি চক্ষু হাসপাতাল, একটি ডায়াগণস্টিক সেন্টার ও একটি দাঁতের চিকিৎসা কেন্দ্র এবং আলীগঞ্জ বাজারস্থ একটি চক্ষু হাসপাতাল বন্ধ ও সিলগালা করে দেন।
সরকারি নিবন্ধন (লাইসেন্স) ছাড়াও প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনুমোদনহীন ফার্মেসী, এক্স-রে, টেকনেশিয়ান না থাকা, চিকিৎসক নেই কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নাম ব্যবহার করে ব্যানার টানিয়ে রাখাসহ নানা অনিয়ম দেখা গেছে বলে ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে গত বুধবার (২৫ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুষ্ঠিত এক সভায় আগামি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশের সব অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের সিদ্ধান্ত হয় এবং সিদ্ধান্ত দেশের সব সিভিল সার্জনকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর হাজীগঞ্জের হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো পরিদর্শন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
৬টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও সিলগালার বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (নিবন্ধন) দেখাতে না পারায় উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করা হয়েছে। এ সময় তিনি বলেন, পরবর্তীতে কাগজপত্র নিয়ে আসলে এসব প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মাওলা জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় গত তিন/চারদিন অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে অভিযান চালানো হয়। তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সোমবার অনুমোদনহীন ৬টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও সিলগালা করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
৩১ মে, ২০২২।