হাজীগঞ্জে কিশোর সাইমুনের দাফন সম্পন্ন

দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে টোরাগড় ও মকিমাবাদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত কিশোর মো. সাইমুন হোসেনের (১৬) মৃতুর ঘটনায় হত্যা মামলা (নং-১৪) দায়ের করা হয়েছে। অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) মামলাটি দায়ের করেন নিহতের বাবা সাইফুল ইসলাম।
এ দিন বিকালে বাদ আছর নিহত সাইমুনের নানার বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের দিঘদাইর গ্রামের সর্দার বাড়িতে জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বাবা মো. ইউনুছ।
এর আগে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে হাজীগঞ্জ বাজারে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় সাইমুন হোসেনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা এবং গত শনিবার রাতে সে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
নিহত সাইমুন হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন তাহফিজুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তার নানার বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের দিঘদাইর গ্রামে এবং তার সৎ বাবার বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া চরবাকিলা প্রধানীয়া বাড়ি। সে তার মায়ের সাথে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন খাটরা-বিলওয়াই এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, মামলা তদন্ত করা হচ্ছে এবং তদন্তপূর্বক আসামিদের চিহ্নিত করে আটক করা হবে। এছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক অবস্থায় বিরাজমান। সেনাবাহিনীসহ আমাদের যৌথ অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, নিহতের বাবা ইউনুছ সংবাদকর্মীদের জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় সাইমুন হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে এশার নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার উদ্দেশে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ সাধনা ঔষধালয়ের সামনে দাঁড়িয়েছিলো। এসময় মারামারি মধ্যে পড়ে গেলে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে কুপিয়ে ফেলে রাখে।
তিনি বলেন, সাইমুনের অবস্থা খারাপ হলে আমরা কুমিল্লা নিয়ে যাই। কুমিল্লায় তার অবস্থার অবনিত হলে গত শনিবার দুপুরে ঢাকা নিয়ে যাই। সেখানে রাত আটটার দিকে সাইমুন মারা যায়।
এসময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, তার (সাইমুন) বাবা মারা যাওয়ার পর আমি তার মা বিউটিকে বিয়ে করি। এরপর থেকে আমার ছেলে হিসেবেই আমি তাকে লালন-পালন করছি এবং পড়ালেখা করাচ্ছি। যারা আমার বুকের ধন কেড়ে নিয়েছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই।
উল্লেখ্য, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাজীগঞ্জে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিন সন্ধ্যার পর হাজীগঞ্জ বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পৌরসভাধীন টোরাগড় ও মকিমাবাদ গ্রামের দুই গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইট-পাটকেল ও কাঁচের বোতল নিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হন। এতে দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত হন ব্যবসায়ীরা এবং ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পথচারীসহ আহত হন অর্ধ-শতাধিক ব্যক্তি। এর মধ্যে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত কয়েকজনকে কুমিল্লা ও ঢাকা পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে শনিবার রাতে সাইমুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।