মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন হাজীগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী পরিচালক (বীজ বিপনন) এর কার্যালয় ও থানা বীজ বিক্রয় কেন্দ্রে রয়েছে জনবল সংকট। এ কার্যালয়ে ৪ পদের বিপরীতে কাজ করছেন একজন অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকারী। চলতি দায়িত্বে থাকা একজন উপ-পরিচালক থাকলেও তিনি অফিসে আসা-যাওয়া করছেন নিজের ইচ্ছেমতো। যার ফলে বীজ কিনতে (ক্রয়) এসে প্রায় সময়ে খালি হাতে ফিরে যেতে হয় কৃষকদের।
জানা যায়, উপজেলার উপ-সহকারী পরিচালক (বীজ বিপনন) এর কার্যালয়ের উপজেলা পর্যায়ে একজন উপ-সহকারী পরিচালক, গুদাম রক্ষক (স্টোর কিপার), চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (এমএলএসএস) এবং পাহারাদারসহ চারটি পদ রয়েছে। চলতি দায়িত্বে উপ-সহকারী পরিচালক সাইফুর রহমান ছাড়া বাকি তিন পদ রয়েছে শূন্য।
দায়িতে থাকা সাইফুর রহমান একই বিভাগে কুমিল্লায় মার্কেটিংয়ে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি নিজের ইচ্ছেমতো এবং নিয়মিত কুমিল্লায় অফিস করায় হাজীগঞ্জের কার্যালয়টি রয়েছে মূলত জনবলহীন। যদিও গোলাম মোস্তফা নামের একজন অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকারী এখানে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তিনি বীজ বিক্রয়সহ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, উপ-সহকারী পরিচালক সাইফুর রহমান কুমিল্লায় নিয়মিত অফিস করার কারণে তাকে হাজীগঞ্জে পাওয়া যায় না। ইরি-বোরো ধান বপনের এই মৌসুমে নিয়মিত কর্মকর্তার উপস্থিতি না থাকায় মাঝে মাঝে কৃষকদের বিপাকে পড়তে হয়। কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাত করতে না পারায় বীজ ক্রয় এবং বীজ সংক্রান্ত পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন কৃষকরা। যার ফলে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এসেও প্রায় সময় কৃষকদের খালি হাতে ফিরে যেতে হয়।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, উপজেলা চত্বরে অবস্থিত কোর্ট মসজিদের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত একটি টিনশেড বিল্ডিংয়ে রয়েছে উপজেলা উপ-সহকারী পরিচালক (বীজ বিপনন) এর কার্যালয়টি। সেখানে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন এর উপ-সহকারী পরিচালক (বীজ বিপনন) এর কার্যালয় ও থানা বীজ বিক্রয় কেন্দ্রের সাইনবোর্ড সাঁটানো থাকলেও নেই কোন কর্মকর্তা। কর্মকর্তার টেবিলের উত্তর পাশে অবস্থিত চেয়ার-টেবিলে বসে আছেন অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকারী গোলাম মোস্তফা।
কথা হয় গোলাম মোস্তফার সাথে। তিনি বলেন, গত জুলাই মাসে অবসরে গিয়েছি। এখানে জনবল না থাকায় স্যারের (সাইফুর রহমান) অনুরোধে কাজ করছি। কৃষক আসলে ধান বিক্রি করি, না আসলে বসে থাকি। তিনি জানান, চলিত মৌসুমে বিআর ২৮ ও ২৯ ধানের বীজ ছাড়া অন্য কোন বীজ নেই।
উপ-সহকারী পরিচালক (বীজ বিপনন) সাইফুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, এখানে ৪ পদের বিপরীতে তিনিই আছেন। কুমিল্লায় অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকায় হাজীগঞ্জ ও কুমিল্লায় অফিস করেন। তাই অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকারী গোলাম মোস্তফাকে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে হাজীগঞ্জে কাজ করাচ্ছেন। বীজের বিষয়ে তিনি বলেন, মৌসুমের শুরুতে উপজেলা কৃষি অফিসের চাহিদা অনুযায়ী বীজ আনা হয়।
লোকবল সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করে বীজ বিপনন কুমিল্লা অঞ্চল এর উপ-পরিচালক নিগার হায়দার খাঁন জানান, জনবল সংকট থাকায় হাজীগঞ্জে লোক দেয়া যাচ্ছে না। তবে মাস্টার রোলে একজন অফিস সহকারী পাঠাবেন বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বৈশাখী বড়–য়া বলেন, উপজেলার উপ-সহকারী পরিচালক (বীজ বিপনন) এর কার্যালয়ের জনবল সংকট রয়েছে। তাছাড়া উপ-পরিচালক হিসেবে যিনি দায়িত্বে রয়েছেন, তিনি আবার কুমিল্লায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। তাই ওই কর্মকর্তাকে হাজীগঞ্জে ন্যূনতম দুই দিন অফিস করতে বলা হয়েছে।