হাজীগঞ্জে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

নারী ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড়

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
গত ২ বছর করোনা মহামারীর কারণে মন্দা হলেও চলতি বছর হাজীগঞ্জে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। দেখা গেছে, যতই ঈদ ঘনিয়ে আসছে, ততই ক্রেতাদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে হাজীগঞ্জ বাজার। আর বেচাকেনা জমে উঠায়, বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন পোশাক বিক্রেতারা। পাশাপাশি প্রসাধনী ও জুতার দোকানের বিক্রয় কর্মীদেরও তুলনামূলক ব্যস্ততা বেড়েছে।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) দিনব্যাপী বাজারের বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণী বিতান ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও অভিজাত শপিংমল এবং মার্কেটগুলোতে বেড়েছে ক্রেতাদের আনাগোনা। ঈদ বাজার ধরতে বাহারি রঙের পোশাক ঝুলিয়ে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। দেয়া হয়েছে নানা অফার এবং মার্কেটে-মার্কেটে রয়েছে লটারীতে আকর্ষণীয় পুরস্কারের সুযোগ।
আর বাহারি কারুকাজ, হাতের নকশা, ব্লক, নানা রঙের কাপড়ে রঙের ছাপসহ বিভিন্ন রঙিন নতুন পোশাকে সেজেছে কাপড়ের দোকানগুলো। এসেছে নতুন নতুন কালেকশনও। ক্রেতারাও পছন্দের পোশাক দেখে-শুনে ক্রয় করছেন। তবে পুরুষের তুলনায় নারী ক্রেতাদের ভীড় অনেক বেশি। বিশেষ করে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা এবং ইফতারের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ক্রেতাদের ভীড় থাকে।
পোশাক বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পোশাকের সুতা ও ডিজাইনে গরমকে প্রাধান্য দিয়ে আনা হয়েছে নতুনত্ব। আর বেশিরভাগ পোশাকই রাখা হয়েছে সুতি কাপড়ে। ছেলে-মেয়ে-শিশু সবার জন্যই রয়েছে সব ধরনের পোশাক। অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর বিশাল সমাহার রেখেছেন তারা। কারণ হিসাবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেয়া।
প্রতি বছর রমজানের মাঝামাঝি সময়ে ঈদের কেনাকাটা শুরু হলেও এবার রোজার শুরুতেই মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভীড় বেড়েছে। মানুষের ভীড়ে পুরো বাজার যেন এক হয়ে আছে। তাতেই হাসি ফুটেছে বিক্রেতাদের মুখে। তবে পোশাাকের দোকানে প্রচুর ক্রেতা সমাগম দেখা গেলেও, সেই তুলনায় জুতা ও প্রসাধনীর দোকান সেভাবে বিকিকিনি জমে উঠেনি।
এদিকে ঈদ বাজারকে সামনে রেখে হাজীগঞ্জ বাজারে বেড়েছে যানজট। বাজারের প্রধান সড়ক কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশের ট্রাফিক-পুলিশ, হকারদের দৌঁড়ের উপর রাখলেও যানজট তেমন একটা নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে বোগদাদ ও রিলাক্স পরিবহন এবং সিএনজিচালিত স্কুটার ও অটোরিকশায় বাজার জুড়েই যাত্রীদের ওঠা-নামা করা। অর্থাৎ যেখানে-সেখানে স্ট্যান্ড হিসাবে ব্যবহার করা।
অপরদিকে ঈদের বাজারকে ঘিরে পুলিশের দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে নির্বিঘেœ কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদের নির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ সার্কেল) মো. সোহেল মাহমুদের তত্ত্বাবধানে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থাগ্রহণ করেছে। যার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন থানার অফিসার ইনচার্জ।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, বাজারে সাদা পোশাকে ও টহল পুলিশ নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছে। তিনি ক্রেতা-বিক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ছিনতাইকারী ও প্রতারক থেকে সাবধান থাকুন এবং কাউকে সন্দেহ হলে অথবা আইন-শৃঙ্খলাজনিত যে কোন প্রয়োজনে তাৎক্ষনিক পুলিশকে জানান।
এসময় তিনি ক্রেতা-বিক্রেতাদের ব্যবসায়িক ও ব্যাংকিং কাজে বেশি টাকার লেনদেন হলে পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার আহ্বান জানান।

১৯ এপ্রিল, ২০২২।