হাজীগঞ্জে ধস্তাধস্তিতে শিশুর মৃত্যু

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে মক্তব থেকে আরবি পড়ে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে এক শিশুর ধাক্কায় শাহাদাত হোসেন (৮) নামের আহত শিশুটি মারা গেছে। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জানাযা শেষে শিশুকে নিজ বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়। তাকে রিয়াদ হোসেন নামের অপর এক শিশু ধাক্কা দেয়।
এর আগে এদিন সকালে উপজেলার বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের নাটেহরা গ্রামের দক্ষিণ পাড়া বাইতুন নূর জামে মসিজদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া শিশু শাহাদাত হোসেন ওই গ্রামের বশির মেম্বার বাড়ির অটোচালক টিটুর একমাত্র ছেলে। ধাক্কা দেওয়া শিশু রিয়াদ হোসেন একই বাড়ির প্রবাসী শিপনের ছেলে। দুই শিশুই নিকটাত্ময়ী। এর মধ্যে মারা যাওয়া শিশু মামা ও ধাক্কা দেওয়া শিশু ভাগিনা হয়।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে মক্তব থেকে আরবি পড়ে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন শিশু শাহাদাত হোসেন ও রিয়াদ হোসেন। পথে দুষ্টামির ছলে শাহাদাতকে ধাক্কায় দেয় রিয়াদ। এতে রাস্তার পাশে কাটা গাছের গুঁড়িতে পড়ে শাহাদাত গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শিশুটিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
পরবর্তীতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এদিন দুপুরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু শাহাদাত হোসেন মৃত্যুবরণ করে। খবর পেয়ে বুধবার সকালে হাজীগঞ্জ থানার এসআই মো. আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহত শিশুর সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করেন।
এদিকে মারা যাওয়া শিশু শাহাদাত হোসেনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছাড়পত্রে হার্ট ফেলিউর (হৃদরোগ আক্রান্ত) বলে উল্লেখ করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ধাক্কায় দেওয়া শিশুটি পড়ে গিয়ে আহত হলেও তার শরীরের কাঁটা-ছেড়া বা ফাঁটার কোন চিহ্ন ছিলো না। এ ঘটনায় দুই শিশুর পরিবার, স্বজন ও বাড়ির লোকজনসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহতের দাদী রিনা বেগম (৬০) জানান, আমার নাতি আল্লাহর ডাকে চলে গেছেন। দু’জনেই (শাহাদাত ও রিয়াদ) অনেক ছোট। কি অভিযোগ দেবো?
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় উভয় পরিবারের অভিযোগ না থাকায় এবং লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হবে।

০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫।