হাজীগঞ্জে পানি প্রবাহের গতিপথ উন্মুক্ত করলেন ইউএনও

সরকারি খাল ও হালট দখলমুক্ত

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে কাগজে খাল আছে, হালট আছে, কিন্তু বাস্তবে পানি প্রবাহের কোন জায়গা নেই। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখলে নিয়ে ভরাট করেছেন। দখলকৃত খাল ও হালটে রয়েছে নানা স্থাপনা। বর্ষায় সময় মতো পানি প্রবাহ ও নিষ্কাশন না হওয়ায় প্রতি বছর কৃষকদের নানা কৌশলে ফসল উৎপাদন করতে হতো। যার ফলে বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি উৎপাদন খরচ এই এলাকার কৃষকদের।
এতে করে প্রায় এক হাজার হেক্টর কৃষি জমির হুকমির মুখে পড়ে। অবশেষে এক যুগ পর অবৈধ দখল উচ্ছেদের মাধ্যমে খাল উদ্ধারের কাজ শুরু করে পানি প্রবাহের গতিপথ উন্মুক্ত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম। সোমবার (৬ জুন) দুপুরে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের পাঁচৈই গ্রামের ব্রিজের পাশে সরকারি খাল ও হালট দখলমুক্ত করার মাধ্যমে পানি প্রবাহের গতিপথ উন্মুক্ত করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়নের সেন্দ্রা-পালিশারা-কাশিমপুর সড়কের পাঁচৈই ব্রিজের উত্তর পাশে ২৫২নং পাঁচৈই মৌজার ৮৯৭নং দাগে ‘ক’ তফসিলভূক্ত সরকারি খাল ও হালট দখল করে মার্কেট নির্মাণ করে স্থানীয় মাইজের বাড়ির মৃত ওমর আলীর ছেলে হাফেজ হোসেন। এতে ওই এলাকার কৃষি মাঠ ও এলাকার পানির গতিপথ ও নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
এরপর সরেজমিন তদন্ত করে দখলকৃত খাল ও হালটি সরকারি চিহ্নিত করে দখলমুক্ত করার ব্যবস্থাগ্রহণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম। সোমবার তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাৎক্ষণিক সরকারি খাল ও হালট দখলমুক্ত করে পানিপ্রবাহের গতিপথ উন্মুক্ত করে দেন। এসময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসান মানিক, সার্ভেয়ার মো. কাজল মিয়াসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, পর্যায়ক্রমে সবগুলো জনগুরুত্বপূর্ণ খাল দখলমুক্ত করা হবে। খাল দখল করায় কৃষি জমিগুলোতে থেকে যথাসময়ে বর্ষা মৌসুমে জমে থাকা পানি সঠিক সময়ে নিষ্কাশন হতে পারে না। এতে কৃষি জমিগুলো পতিত হয়ে পড়ে। কিন্তু কোনভাবেই কৃষি জমির ক্ষতি করা যাবে না। পরবর্তীতে পরিকল্পনা নিয়ে পানি নিষ্কাশনে খালগুলো দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এদিকে খাল ও হালট দখলমুক্ত করে প্রায় এক হাজার হেক্টর কৃষি জমির জলাবদ্ধতা নিরসন এবং পানি প্রবাহে ও বর্ষায় পানি নিষ্কাশনের পথ উন্মুক্ত করায় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাজি জসিমউদ্দিন এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য মনির হোসেনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ওই এলাকার কৃষকরা।

০৭ জুন, ২০২২।