হাজীগঞ্জে প্রতিবন্ধী যুবকের লাশ উদ্ধার


মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে নুরুল ইসলাম নুরু (২৫) নামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের এন্নাতলী গ্রামের মাঠ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য নুরুল ইসলামের মরদেহ চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
নুরুল ইসলাম নুরু ওই ইউনিয়নের এন্নাতলী গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির আবুল বাসারের ছোট ছেলে। তার পরিবার এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকা- বলে দাবি করছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ ওই ইউনিয়নের তরুণ লীগের সভাপতি কাউছার হামিদ মিয়াজীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) মো. আফজাল হোসেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাফর আহমেদ ও ফারুকুজ্জামান।
নিহত নুরুল ইসলামের বাবা আবুল বাসার জানান, আমিসহ আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের জন্য আমি ও আমার ছেলেসহ এলাকার অনেকে তরুণ লীগ নেতা কাউছারকে টাকা দিয়েছি। কিন্তু গত এক বছরে ভাতার কার্ড ও টাকা পাইনি। এ বিষয়ে আমার ছেলে প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে কাউছার।
এক প্রশ্নের জবাবে আবুল বাসার জানান, সোমবার রাতেও নুরুল ইসলামকে হুমকি-ধমকি দেয় কাউছার ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা। এরপর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির পাশে মাঠে নুরুল ইসলামের লাশ পাওয়া যায়। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। যারা আমার ছেলেকে খুন করেছে, তাদের ফাঁসি চাই। এদিকে থানা হেফাজতে থাকায় কাউছার হামিদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মৃত্যুর দেড় মাস আগে সাংবাদিকের কাছে নুরুর তথ্য দেয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওই তরুণ লীগ নেতা কাউছার হামিদ প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের দেয়ার কথা বলে নুরুর কাছ থেকে ২৭শ’ টাকা নেন। তারপরও কার্ড না পাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন মিয়াজির কাছে অভিযোগ দিয়েও সুরাহ পায়নি বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন মিয়াজী বলেন, আমি তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দিয়েছি। আগামি জানুয়ারি মাস থেকে সে ভাতা পাওয়ার কথা ছিলো। ছেলেটি কিভাবে মারা গেছে, পুলিশ এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য বের করুক। তবে রাজনৈতিকভাবে যেন কাউকে হয়রানি করা না হয়।
কাউছার হামিদকে আটক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার জানামতে কাউছার সম্পূর্ণ নির্দোষ। তারপরও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মৃত্যুর কারণ আবিষ্কার করুক।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, লাশের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে, মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।