আবারো আগুন-সন্ত্রাস শুরু করেছে বিএনপি-জামায়াত
………প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি
মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে রোববার (৩০ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলাসহ দেশের ৫০টি মসজিদের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু একদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়ে দেশ গড়েছেন। অন্যদিকে ইসলাম প্রচারের জন্য টঙ্গীতে ইজতেমার জায়গা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন নির্মাণ, কাকরাইলে মসজিদের জায়গা দিয়েছিলেন এবং অল্প খরচে মানুষকে হজে পাঠানোর জন্য জাহাজের ব্যবস্থা করেছিলেন।
তিনি বলেন, ৯৬ সালে আমি যখন ক্ষমতায় আসি, তখন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিজস্ব ভবন ছিল না। আমি ১০ তলা ভবন করে দিয়েছি। সব জেলায় স্থায়ী অফিস ছিল না, মাত্র ৩৪ জেলায় অফিস ছিল। আমি সরকারে আসার পর প্রতিটি জেলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জন্য অফিসের ব্যবস্থা ও কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়া আমাদের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। অথচ ইসলামের নামে রাজনীতি করে কিন্তু ধর্মীয় কাজে তাদের কোন আন্তরিকতা ছিল না। যা ছিল শুধু দেখানো। তাদের চরিত্র-তো আপনারা জানেন। একবারে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, অগ্নিসন্ত্রাস। যা গতকাল (শনিবার) আপনারা দেখেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া সঞ্চালনায় তিনি আরও বলেন, তারা কতগুলো বাস পুড়িয়েছে। চলন্ত বাস, ট্রেনে তারা আগুন দিয়েছে। মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, সবখানে আগুন দিয়েছে। ২০১৩-১৪-তে মানুষ পুড়িয়ে এখন আবার আগুন-সন্ত্রাস শুরু করেছে বিএনপি-জামায়াত।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে হাজীগঞ্জে টেলিকনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তী) নির্বাচনী আসনের সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির উদ্দীন, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রকিবুর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো. রুহুল আমিন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলামের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মো. মাঈনুদ্দীন, পৌর মেয়র আ.স.ম. মাহবুব-উল আলম লিপন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসান মানিক, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ রোটা. আহসান হাবিব অরুন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন, উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান।
উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. আবু তাহের, সদর ইউপির চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ প্রধানীয়া সুমন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপজেলা সুপারভাইজর মো. হাছান মজুমদার, মডেল মসজিদের ভূমিদাতা আলহাজ মো. রফিকুল ইসলাম, নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান আজিজ ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল আজিজসহ শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনে ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছেন সারাদেশে উন্নত সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন আধুনিক মসজিদ নির্মাণ করবেন। তারই ধারাবাহিকতায় সারাদেশে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫৬৪টি নতুন মসজিদের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করা হয়েছে। অবশিষ্ট মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণকাজ ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাসহ অজু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে। এছাড়া হজযাত্রীদের নিবন্ধন-প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণকেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, দাফনের আগে জানাজার ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হিফজখানা, প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামিক কনফারেন্স রুম থাকছে।
এছাড়া সাংস্কৃতিক কর্মকা-, ইসলামি দাওয়াত, ইসলামি বই বিক্রয়কেন্দ্র, মসজিদের সঙ্গে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জন্য বোর্ডিংয়ের সুবিধাও রয়েছে। সর্বোপরি, প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলামী সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ প্রচারের পাশাপাশি চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের মর্মবাণী প্রচার করা।
৩১ জুলাই, ২০২৩।