মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :
হাজীগঞ্জ উপজেলার কাঁলচো উত্তর ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রাম থেকে আসাদুজ্জামান ওরফে আসাদ (১৯) নামের এক যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার দুপুরে খিলপাড়া গ্রামের আমিরাজের বিলের ফসলি জমি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবার ও পুলিশের ধারণা, শনিবার দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা তাকে নৃশংসভাবে জবাই করে হত্যা করেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
আসাদ খিলপাড়া গ্রামের বকাউল বাড়ির মো. রফিকুল আলমের একমাত্র ছেলে। তিনি তার পরিবারের সাথে নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের মিজি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে এবং ঢাকার সদরঘাট এলাকায় বিসিএস কনফিডেন্স কোচিং সেন্টারে অফিস সহকারী (পিয়ন) হিসেবে চাকরি করে। গত ১৫ ডিসেম্বর আসাদ গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার সকাল ৮টার সময় আমিরাজের বিলের পশ্চিমপাড়া মিজি বাড়ির পশ্চিম পাশে ফসলি জমিতে গলাকাটা যুবকের মরদেহ দেখতে পায়। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মানিক হোসেন প্রধানীয়াকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং থানায় জানান। পরে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাবেদুল ইসলামে নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে বিষয়টি জানান।
সকাল ১১টায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মো. আলমগীর হোসেন ও পিবিআই পরিদর্শক মো. আনোয়ার হোসেন তাদের নিজ নিজ টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশসহ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট ও আলামত সংগ্রহ করে। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
স্থানীয় রাজাপুর বাজারের নরসুন্দর বিশ^জিৎ পুলিশ ও সংবাদকর্মীদের কাছে বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় আসাদের তিন বন্ধু আমার দোকানে আসে। তাদের মধ্যে একজন দাড়ি ও চুল এবং একজনে দাড়ি কাটেন। তাদের কথাবার্তা এবং পোশাক-পরিচ্ছেদ আমার কাছে সন্দেহজনক মনে হয়েছে। আমি তাদের পরিচয় জানতে চাইলে, আসাদের কাকা বলে তারা পরিচয় দেয় এবং তাদের বাড়ি দাউদকান্দি এলাকায় বলে জানায়। বিশ^জিৎ আরো জানায়, আসাদও তাদের কাকা বলে পরিচয় দেয়। পরে তারা দোকান থেকে বের হয়ে যায়।
আসাদের বাবা রফিকুল আলম জানান, শনিবার বিকেলে আমি ছোট মেয়েকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি কচুয়ায় চলে যাই। আজ আসাদসহ ঢাকায় ফিরে যাওয়ার কথা। রোববার সকালে খবর পাই আসাদকে কে বা কারা হত্যা করে লাশ বিলে ফেলে রেখেছে। আমরা ধারণা তার কাকা পরিচয়ে যারা এলাকায় এসেছে তারাই তাকে হত্যা করেছে। তিনি আরো জানান, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন বা এলাকার কারো সাথে তাদের বিরোধ নেই।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মানিক হোসেন প্রধানিয়া জানান, রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় বিলের মধ্যে যুবকের গলাকাটা মরদেহের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই এবং থানায় জানাই। পরে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও পিবিআই এর কর্মকর্তারা এসে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) মো. আফজাল হোসেন সংবাদকর্মীদের জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। হত্যার সাথে জড়িতের শীঘ্রই খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
- Home
- প্রথম পাতা
- হাজীগঞ্জে যুবককে গলাকেটে হত্যা